আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সামাজিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় নারীদের সমর্থন প্রদান এবং তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সউদি সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সমাজকর্মীরা। তারা বলেন, নারী ক্ষমতায়নের পথে যে- প্রতিবন্ধকতা তার মূল প্রোথিত রয়েছে সউদি আরবের সামাজিক প্রথা ও সংস্কৃতিতে। অনেক সউদি নারী দেশের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিপুল কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। কিন্তু অন্য নারীরাও যাতে এগিয়ে আসতে এবং নিজেদের সামর্থের পরিচয় তুলে ধরতে পারে, সেজন্য চাই আরো সহায়তা।
নারীদের কোণঠাসা করে রাখতে যা প্রয়োজন, তা-ই করে এরকম লোকদের তীব্র সমালোচনা করেছেন ফুয়াদ আল- হামাদ নামে এক শিক্ষা উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এসব লোক বিরাট ভুল করছে। কারণ, তারা নিজেদেরকে নারীদের পুরোপুরি অভিভাবক বানিয়ে ফেলেছে।
তিনি বলেন, সামাজিক প্রথাগুলো নারীদেরকে শেকলে বন্দী করে রেখেছে, তাদের সামনে এগোতে দিচ্ছে না। আমাদের উচিত, নারীরা যাতে দেশ ও অর্থনীতির উন্নতিতে সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তা নিশ্চিত করতে সম্ভবপর কিছু করা।
সউদি আরবে নারী ক্ষমতায়নের ডাক
তিনি বলেন, সামাজিক প্রথাগুলো নারীদের শেকলে বন্দী করে রেখেছে, তাদের সামনে এগোতে দিচ্ছে না। আমাদের উচিত, নারীরা যাতে দেশ ও অর্থনীতির উন্নতিতে সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে তা নিশ্চিত করতে সম্ভবপর সবকিছু করা।
তিনি বলেন, নারীদের পুরুষের সমান অংশীদার হিসেবে দেখতে এবং তাদের ক্ষমতায়ন করতে হবে। তাদের ওপর পুরুষের অভিভাবকত্বের সীমা কতদূর, ইসলাম তা-ও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে।
সমাজকর্মী ও আল-আহসা পৌর পরিষদের সদস্য মাসুমা আল-আবদুলরেদা বলেন, নারীদের রয়েছে অসাধারণ ক্ষমতা। এই ক্ষমতার লাগাম টেনে ধরা ঠিক হবে না। বরং এর যথাযথ ব্যবহারই কাম্য।
তিনি বলেন, যথার্থ সমর্থন পেলে নারী যে-কোনো সংঘাত-সংঘর্ষের মুখোমুখি হতে এবং তা অতিক্রম করতে সক্ষম। কারণ, তাদের রয়েছে বহুকিছু করার অসাধারণ ক্ষমতা। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো, আল-আহসার নারীরা এখনো কোণঠাসা হয়ে আছে। সমাজের শেকলে বাঁধা পড়ে তারা তাদের ক্ষমতা ও মেধা প্রদর্শন করতে পারছে না। তাদেরকে মনে করা হয় ‘অক্ষম’ বলে। মনে করা হয়, তাদের দেখাশোনার জন্য একজন অভিভাবক দরকার। আশা করি, আমাদের পুরুষসমাজ শিগগিরই এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবেন।
সউদি আরবে নারী ক্ষমতায়নের ডাক
রাজা আল-বোয়ালী নামে এক নারী সমাজকর্মী বর্তমান অবস্থার জন্য সামাজিক সংগঠন না-থাকাকে দায়ী করেন। সংগঠন থাকলে তারা নারী ইস্যুগুলো তুলে ধরতে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীদের ভূমিকা নিয়ে সমীক্ষা চালাতে পারতো।
তিনি বলেন, এরকম অল্প কিছু সংগঠন আছে, কিন্তু আরো দরকার।
থানা আল-হাসান নামে আরেক নারী সমাজকর্মী মনে করেন সামাজিক প্রথাগুলো এতোই গভীরে প্রোথিত যে, এখান থেকে বের হয়ে আসা খুবই কঠিন। যদিও কিছু কিছু মানুষ এসব প্রথা পরিবর্তনের পক্ষে লেখালেখি করছেন; কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না। কারণ, সউদি সমাজের বিরাট অংশই এখনো নারীদের সামাজিক শেকলে বন্দী করে রাখার প্রথায় আস্থাশীল।
তিনি বলেন, কাজেই নারীদের চলার পথটি খুব সহজ নয়। নারীদের নিজেদেরই আপন সামর্থের প্রমাণ দিতে হবে। দেখিয়ে দিতে হবে যে, তারা অচলায়তন ভাঙতে সক্ষম। নিন্দুকরা সবসময় নারীদের ক্ষমতার অবমূল্যায়ন করবে এবং তাদের অর্জনকে ছোট করে দেখবে। কারণ, তারা নারীদের পথ চলা দেখতে চায় না।