ইউপি নির্বাচন: আখাউড়া পোস্টারের ‘মরণ’
---
আমীরজাদা চৌধুরি : ‘পোস্টার লাগাইলে সমস্যা কি?’ এ প্রতিবেদককে করা অন্য এক ব্যক্তির প্রশ্ন শুনে এগিয়ে এসে মো. আবু সাঈদ মিয়া বললেন, ‘আমিঅ ব্যাফারটা বুজজিলাম না। ‘কালকা (সোমবার) কয়েকজনরে পোস্টার ছিড়তাছে দেইক্কা আমি আ¹াইয়া গিয়া জিগাইলাম ব্যাফারটা কি? উত্তর শুইন্না বুজলাম জুলানো ছাড়া আডা দিয়া পোস্টার লাগানো নিষেধ’। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের দীঘিরজান এলাকায় কথা হয় আবু সাঈদের সঙ্গে।
খানিক আগেই কথা হয় মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সামনের চায়ের স্টলে বসে থাকা কয়েকজনের সঙ্গে। তাঁরাও জানালেন, গত দু’দিন ধরেই আঠা দিয়ে সাঁটানো পোস্টার নিজ উদ্যোগেই ছিড়ে ফেলছেন প্রার্থী কিংবা তাঁদের সমর্থকরা। মনিয়ন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. রফিক মিয়া জানালেন, প্রশাসনের নির্দেশনার পর তিনি নিজ হাতেই নৌকা প্রতীকের বেশ কিছু পোস্টার ছিড়েছেন।
বলা চলে আখাউড়ায় যেন পোস্টারের ‘মরণ’। প্রশাসনের নির্দেশনার পর আঠা দিয়ে লাগানো সকল পোস্টার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। অন্যদিকে গত রবিবার রাতে হওয়া ঝড়ের কারণে টানানো পোস্টারও ছিড়ে পড়ে গেছে। যে কারণে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এক প্রকার পোস্টারহীন হয়ে পড়েছে আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। তবে আগামী ৭ মে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের ঠিক আগ মুহুর্তে প্রার্থীরা ঠিকই আবার নিয়ম মেনে পোস্টার সাঁটাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আখাউড়ার পাঁচটি ইউনিয়নের সব কয়টিতেই বিশেষ করে মোগড়া ও মনিয়ন্দ ইউনিয়নে বিধি লংঘন করে আঠা দিয়ে পোস্টার লাগানোর যেন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানের কার্যালয়, বাড়ির সীমানা প্রাচীর, দোকানপাট, বিদ্যুতের খুঁটি, গাছ, বিভিন্ন যানবাহন কোনো কিছু বাদ পড়েনি আঠা দিয়ে পোস্টার লাগানো থেকে। এ অবস্থায় বিষয়টি নজরে আসে নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের। নির্বাচন বিষয়ে গত ৩০ এপ্রিল আখাউড়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সভায় আঠা দিয়ে লাগানো পোস্টার সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রার্থীদেরকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর থেকে প্রার্থী কিংবা তাঁদের সমর্থকরা আঠা দিয়ে লাগানো পোস্টার ছিড়ে ফেলেন।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নয়াদিলে এনজিও প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের সীমানা প্রাচীর ও এর আশেপাশের এলাকা, মনিয়ন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মনিয়ন্দ উচ্চ বিদ্যালয়, ইউনিয়ন পরিষদের সীমানা প্রাচীরে লাগানো পোস্টারের বেশিরভাগ অংশই ছেড়া। এছাড়া বিভিন্ন বাড়িঘরের সীমানা প্রাচীরের পোস্টারগুলোও নেই। এসব জায়গায় পোস্টারের ছেড়া অংশ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কোথাও কোথাও অনেককে পোস্টার ছিড়তেও দেখা যায়। এছাড়া ঝড়ের কারণে রশি দিয়ে টানানো পোস্টারও ছিড়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। যে কারণে এক প্রকার পোস্টারহীন হয়ে আছে নির্বাচনমুখর এলাকাগুলো। তবে দু’একজন প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্পে এখনও আঠা দিয়ে পোস্টার লাগানো দেখা গেছে। নিজেদের উদ্যোগে পোস্টার ছিড়ে ফেলার এ