যে কোনো সময় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
নিউজ ডেস্ক : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদন পেলে এপ্রিলের প্রথম দিকেই ঘোষণা করা হবে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি। শুধু কেন্দ্রীয় কমিটি নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিও ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ৩ এপ্রিল শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। সব ঠিক থাকলে ওইদিনই কমিটির ঘোষণা আসতে পারে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন আমাদের সময়কে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটির কাজ শেষ পর্যায়ে। আমাদের অভিভাবক আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা অনুমতি দিলেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হবে এবং তা হবে এপ্রিলের মধ্যেই।’
প্রায় ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ার বিষয়ে শোভন বলেন, ‘আমরা এমন একটা পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছি, যখন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছিল। আবার নির্বাচনের আগে-পরে হয়েছে কোটা আন্দোলন। এর পর হয়ে গেল ডাকসু নির্বাচন। সব মিলে আমাদের হাতে সময় ছিল খুবই কম। এই কম সময়ের মধ্যেই আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি।’
কমিটি গঠনে কী কী বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী আমাদের সময়কে বলেন, ‘এবারের কমিটিতে যারা জায়গা পাচ্ছেন, তাদের বিষয়ে অনেক যাচাই-বাছাই হয়েছে এবং হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কিংবা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উত্তরসূরিরা এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাচ্ছেন। ত্যাগীদেরও মূল্যায়ন করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীর পরিবার এবং বিপথগামীরা কোনোভাবেই এবারের কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন না।’ ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনের আড়াই মাস পর গত বছর ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। তবে ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি সেই নেতৃত্ব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রূপান্তরকরণের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত। সেটি ঘোষণার পর পরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রক্রিয়া দ্রুত সময়ে শেষ করা হবে।
এ ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য, জনপ্রিয়, মেধাবী প্রজন্মকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম, পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি ও সাংগঠনিক দক্ষতাসম্পন্ন, সংগঠনের সব পর্যায়ের সাংগঠনিক কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত- এমন ছাত্রনেতাদের কমিটিতে আনা হবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের বিষয়ে ওই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর পরই আমাদের নেতৃত্বে থাকা কমিটিকেও পূর্ণাঙ্গ করব। ইতোমধ্যে আমরা যাচাই-বাছাই শেষ করেছি।’ একই কথা জানিয়েছেন দক্ষিণের সভাপতি মেহেদী হাসান। আমাদের সময়কে তিনি বলেন, ‘রাজপথের ত্যাগী, নিয়মিত ছাত্র, অবিবাহিত, জামায়াত-শিবির, চাঁদাবাজি ও মাদকব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই- এমন নেতৃত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’ খোঁজ নিয়ে যানা গেছে, পদপ্রত্যাশীরা ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও প্রভাবশালী সংসদ সদস্যদের কাছে গিয়ে তদবিরের জন্য ভিড় করছেন।
নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতেই শেষ চেষ্টা করছেন ছাত্রনেতারা। তবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দেওয়া শর্তের সঙ্গে না মিললে কারও তদবিরেই ছাত্রলীগের এ কমিটিতে জায়গায় হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দৈ.আ.স