প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকার কথা দিলেন এরশাদ
অতীতের মতো সামনের দিনে সুখে দুঃখে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবেন এমন কথাই দিয়েছেন সম্মিলিত জাতীয় জোট ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বিরোধীনেতা বেগম রওশন এরশাদ।সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় গণভবনে অংশ নেওয়া সংলাপে প্রধানমন্ত্রীকে এমন কথাই দেন জাপার দুই শীর্ষনেতা। তেমন কোন এজেন্ডা না থাকায় সংলাপ মূলত চা আপ্যায়ণ চক্রেই পরিণত হয়। চা আপ্যায়ণ পর্ব ছাড়া তেমন কোন অর্জন নেই বলে সংলাপে অংশ নেওয়া অনেকেই অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা জানান, জাতীয় সংলাপে এসে জাতীয় বিষয় নিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারি নাই। এটি ছিল স্রেফ চা চক্র। শুধুমাত্র জাতীয় পার্টিজোট আওয়ামী লীগের জোটের সঙ্গে নির্বাচনে থাকবে এ ছাড়া আর তেমন কোন ম্যাসেজ নেই সংলাপে।
সূত্র জানায়, সংলাপে বসলে এরশাদ আসন নিয়ে কথা বলবেন বলে প্রকাশ্য বক্তব্য দিয়েছিলেন কিন্তু সংলাপে গিয়ে আসন ভাগাভাগি নিয়ে তেমন কোন কথা বলেননি। নিজের মামলা মোকাদ্দমা নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে সরকারের উপর ক্ষোভ ঝাড়লেও তা নিয়েও কোন কথা ছিল না তার। তবে একটা লিখিত বক্তব্য নিয়ে যান এরশাদ সেটাই পড়ে শোনান প্রধানমন্ত্রীকে।পরে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে কথা বলেন বিরোধী নেতা রওশন এরশাদ এমপি, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যরিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। সংলাপে অংশ নেওয়া নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের দায়িত্বশীল সূত্র এতথ্য জানায়।
সূত্র জানায়, একসঙ্গে থাকার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এরশাদ বলেন, আমাদের কোন দাবি দাওয়া নেই। আপনার সাক্ষাতই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। আপনার নেতৃত্বে আমরা সব সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তিনি আরো বলেন, আমরা অতীতেও ছিলাম, ভবিষ্যতেও একসঙ্গে থাকতে চাই।সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের সুরে কথা বলেন বিরোধী নেতা রওশন এরশাদও। তিনি বলেন, সুখে দুখে আমরা আপনার সঙ্গেই আছি। এরশাদ ও রওশনের কথা শোনেন প্রধানমন্ত্রী। জবাবে তিনি বলেন, দেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়ন ধারাবাহিকতা রক্ষায় জাতীয় পার্টি আমাদের সঙ্গে আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।
এসময় তিনি গতবারের আসন ভাগাভাগি নিয়েও কথা বলেন। এরশাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতবার আপনারা ভুল না করলে আরো বেশি আসন পেতেন। এবার আসন বন্টন নিয়ে কোন সমস্যা হবে না। সময় মত সবকিছু ঠিক করা হবে।সংলাপ শেষে সম্মিলিত জাতীয় জোটের নেতারা চা চক্রে মিলিত হন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদের খাবারে আপ্যায়িত হন তারা। রাত সোয়া ৯টার দিকে গণভবন থেকে বেরিয়ে আসেন এরশাদসহ জোটের নেতারা। পরে রাত ১০টার পরে এরশাদের বনানী কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি।
এসময় জোটের শরিক ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মান্নান, মহাসচিব এম এ মতিন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাহফুজুল হক, ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নসর ওয়াহেদ ফারুক, জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, এস এম ফয়সল চিশতী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে অংশ নিতে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় গণভবনে যান এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি ও জোটের শরিকদলগুলোর মোট ৩৩নেতা।
জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে সংলাপে অংশ নেন দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় নেতা গম রওশন এরশাদ এমপি, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, দলের মহাসচিব ও জোটের মুখাপাত্র এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, এমএ ছাত্তার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসন খান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, আলহাজ সাহিদুর রহমান টেপা, অ্যাড. শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, ফখরুল ইমাম এমপি, মজিবুল হক চুন্নু এমপি, সালমা ইসলাম এমপি, সুনীল শুভরায়, এসএম ফয়সল চিশতী, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, মসিউর রহমান রাঙা এমপি, সোলায়মান আলম শেঠ, আতিকুর রহমান আতিক, মেজর (অব.) খালেদ আক্তার, এটিইউ এম তাজ রহমান, সফিকুল ইসলাম সেন্টু, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি ও নুরুল ইসলাম ওমর এমপি।
সম্মিলিত জাতীয় জোটের পক্ষে শরিক দল বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা এমএ মান্নান, মহাসচিব এম এ মতিন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাহফুজুল হক, যুগ্ম মহাসচিব জালাল আহমেদ, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের চেয়ারম্যান আবু নাসের ওয়াহেদ ফারুক, বিএনএ’র চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনি সংলাপে অংশ নেন।
সূত্র: বিডি-জার্নাল