কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় যা ঘটেছিল অভিনেত্রীর জীবনে!
‘কাস্টিং কাউচ’ এখন মিডিয়া পাড়ার বহুল ব্যবহৃত একটি বাক্য। মূলত সিনেমায় সুযোগ পেতে হলে পরিচালক-প্রযোজক বা নায়কদের কাছে শরীর সঁপে দিতে হবে নায়িকা ও অন্য অভিনেত্রীদের। তাদের সাথে যেতে হবে বিছানায়। ফিল্মের ভাষায় ইংরেজিতে একেই বলে কাস্টিং কাউচ। ঠিক যেন ‘গিভ অ্যান্ড টেক’ পলিসির মতো।
গত বছরের এপ্রিল থেকে এই কাস্টিং কাউচ নিয়েই উত্তাল গোটা বিশ্বের ফিল্ম জগৎ। কাস্টিং কাউচ অর্থাৎ সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ করে দেয়ার বদলে যৌন হেনস্তা নিয়ে উত্তেজনা শুরু হয়েছিল হলিউড প্রযোজক হার্ভে ওয়েনস্টিনের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তা ও ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই।
সম্প্রতি কাস্টিং কাউচ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন অদিতি রায় হায়দারি। ঠিক কী ঘটেছিল তাঁর সঙ্গে? এই বলিউড অভিনেত্রী বলেন, একটা সময়ে এই ধরনের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁকে বেশ কিছু কাজ হারাতে হয়েছে। শুধু অরাজি হয়েই থেমে থাকেননি তিনি, তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এই জঘন্য প্র্যাকটিসের বিরুদ্ধে।
‘সানডে গার্ডিয়ান’-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তাঁর নিজের কাস্টিং কাউচ অভিজ্ঞতা এভাবেই শেয়ার করেন । বলিউডে সাম্প্রতিক সময়ে যে কয়েকজন সম্ভাবনাময় অভিনেত্রী এসেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম অদিতি রাও হায়দারি। হায়দরাবাদের রাজপরিবারের মেয়ে তিনি এবং তাঁর আত্মসম্মানবোধ অত্যন্ত প্রখর। তাই কাজ পাওয়ার জন্য যে কোনও মূল্য দিতে তিনি রাজি ছিলেন না।
তিনি আরও বলেন, কাস্টিং কাউচ নিয়ে আর নতুন করে কিছু বলার নেই। সিনেমায় মুখ্য চরিত্র বা যে কোনও চরিত্রে কাস্টিংয়ের বিনিময়ে অভিনেত্রী এবং অনেক সময়ে অভিনেতাদেরও পরিচালক-প্রযোজক-কাস্টিং ডিরেক্টররা নানা ধরনের কুপ্রস্তাব দিয়ে থাকে। মূলত তাঁদের বলা হয় শয্যাসঙ্গী অথবা শয্যাসঙ্গিনী হতে। অনেকেই এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেন ভাল চরিত্র পাওয়ার জন্য। কিন্তু সবাই সেই তালিকায় পড়েন না।
বিদেশি পত্রিকাকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে অদিতি বলেছেন যে কাস্টিং কাউচের বিরুদ্ধে তাঁর এই পদক্ষেপের জন্য দীর্ঘ সময়, প্রায় আট মাস তিনি কোনও কাজ পাননি। কিন্তু তিনি দমে যাননি। নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকেছেন। তাঁর এই সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত যে তাঁর কেরিয়ারের কোনও ক্ষতি করতে পারেনি, তার প্রমাণ তাঁর সাম্প্রতিক কাজগুলি।
‘পদ্মাবত’-এ আলাউদ্দিন খলজীর স্ত্রীর চরিত্রটির জন্য স্বয়ং জয়া বচ্চন অদিতির নাম সুপারিশ করেছিলেন। অদিতির মতো যদি সব অভিনেত্রী এবং অভিনেতারা কাস্টিং কাউচের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান, তবেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পরিবর্তন সম্ভব।