‘আমি সব সময়ই হাসি’
সড়ক ও নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, ‘আমি সব সময়ই হাসি। আমার কালো মুখ কেউ দেখেনি। এটা কি দোষের।’ সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে, রোববার (২৯ জুলাই) বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় হাসতে হাসতে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
সচিবালয়ে শাজাহান খান বলেন, আমি পদত্যাগ করলেই কি সব সমস্যার সমাধান হবে বরং এই পদে থেকেই সমস্যার সমাধান করা উত্তম। আমি সব সময়ই হাসি। আমার কালো মুখ কেউ দেখেনি। এটা কি দোষের? এ ঘটনায় আমার ক্ষমা চাওয়ার কথা না, তারপরও দুঃখ প্রকাশ করছি।
এ সময় তিনি জানান, শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার ঘটনায় অবশ্যই দোষী ব্যক্তির কঠোর শাস্তি হবে। তবে তদন্তের পরই এর বিচার হবে।
তিনি আরো বলেন, আমি আন্দোলনরত ভাই-বোনদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই, অবশ্যই দায়ীদের বিচার হবে। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি। দুর্ঘটনা রোধে আইনে সংশোধনী আনা হবে।
দুর্ঘটনায় দায়ী বাসটির রুট পারমিট বাতিল হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বাসের রেষারেষিতেই এ দুর্ঘটনা তবে তা ব্রেক ফেলের জন্য কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। দোষী যেই হোক না কেন এ অপমৃত্যুর বিচার হবেই।
নৌমন্ত্রী বলেন, সড়ক পরিবহনের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় প্রধানমন্ত্রীর ৬ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আগামীকাল (মঙ্গলবার) পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। এ বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ সময় পরিবহন শ্রমিকদের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের সময় ছাত্র ভাইবোনরা রাস্তায় ছিলেন না। সে সময় তখন মানুষের স্বার্থে পরিবহন চালক ও শ্রমিকরা ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি নামিয়েছে -চালিয়েছে, বিএনপি-জামায়াতের হামলায় আহত নিহত হয়েছেন। জ্বালাও-পোড়াওয়ের প্রতিবাদে পরিবহন শ্রমিকদের অবদানও কম নয়।
জাবালে নুর মন্ত্রীর শ্যালকের গাড়ি কি না? এ প্রশ্নের জবাবে শাজাহান খান বলেন, ১৯৬২ সাল থেকে আমরা গাড়ির ব্যবসা করি । তবে কোন গাড়ির মালিক কে তা আমি জানি না। পাঁচ বছর আগে জাবালে নূরের পরিচালক ছিল আমার শ্যালক। সে এখন নেই।
সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানান, বাংলাদেশ দুর্ঘটনাপ্রবণ দেশের তালিকায় বিশ্বের মধ্যে ৯০ তম । ২০১৪ সালে যা ছিল ৯ নম্বরে।
শাজাহান খান এ সময় সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী তার ওপর বিরক্ত , তাকে তিরস্কার করেছেন বলে ফেসবুকের যে খবর এসছে তা গুজব।
প্রসঙ্গত, গত রোববার (২৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন।
বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যাওয়া দুই শিক্ষার্থী হলেন- শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।