নাটক করা নিয়ে যা বললেন নেইমার
নেইমার কি তাহলে কোন ছবিতে অংশ নিচ্ছেন। না কি তিনি অভিনয় শুরু করে দিয়েছেন। না তেমন কিছু না বিশ্বকাপে নেইমারের খেলায় ফাউলের পর পড়ে যাওয়াকে নেইমারের অভিনয় বলে অখ্যা দিচ্ছেন অনেকে। যার ফলে বিরক্ত ভার্চুয়ালবাসী। তাকে ‘পাকা অভিনেতা’ অ্যাখ্যা করে নানা আঙ্গিকে ট্রোল করছেন তারা।
তবে নেইমার নিজে কি বলছে তার এই হুটহাট পরে যাওয়া নিয়ে। তিনি বলেছেন, খেলা থেকে তাঁর মনোযোগ সরিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যেই প্রতিপক্ষরা এমন করছে।
নেইমার আরো বলেন, এসবই খেলা থেকে তাঁর মনোযোগ দূরে সরিয়ে দেয়ার কৌশল প্রতিপক্ষের, ‘আমি মনে করি এটা আমার মনোযোগ নষ্ট করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমাকে নিয়ে কে কী সমালোচনা করছে, তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। এমনকি প্রশংসা করলেও আমি গায়ে মাখি না, কারণ এগুলো একজন অ্যাথলেটের আচরণে প্রভাব ফেলতে পারে। গত দুই ম্যাচে আমি মিডিয়ায় কোন কথা বলিনি। কারণ প্রচুর লোক নিজেদের মনগড়া কথা বলছিল, উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছিল। আমি ঠিক জানি না তারা এসব লোক দেখানোর জন্যই করছিল কী না। আমি এখানে আমার সতীর্থদের সাথে নিয়ে জিততে এসেছি।’
এদিকে নেইমার কেন পরে যায় তারও ব্যাখ্যা দিয়েছে বিভিন্ন গনমাধ্যম। সেখানে তারা উল্লেখ করেছে, একজন প্লেয়ারের শারীরিক ওজনের সর্বনিম্ন এভারেজ ৭২ কেজি। যেখানে মেসির ওজন ৭০ কেজি, রোনালদোর ওজন ৮৫-৮৬ কেজি আর নেইমারের ওজন মাত্র ৬৪-৬৫ কেজি।। তাই হার্ড টেকেলে মেসি রোনালদোর তুলনায় নেইমারের শরিরের প্রতি ব্যালেন্স রাখা কষ্টকর। তার উপর তার শরীরের ৩টি স্থানে ভাংগা। কোমরে, ডান পায়ের গোড়ায়, বাম পায়ের রানের গোড়ায়।
শরীরের তিন স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারনে ডাক্তার বলেছে হার্ড টেকেলে নেইমার যাতে শরীরের উপর অতিরিক্ত প্রেশার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্টা না করে। এই কারনেই হার্ড টেকেল করলে নেইমার পড়ে যায়। আর কিছু কিছু মানুষ তো এইটাকে ট্রল হিসেবে নিয়ে নিয়েছে। নেইমারকে নিয়ে আমাদের গর্ব করা উচিৎ যে সে তিনটা ভাংগা নিয়ে বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে উপস্থিত হয়েছে।
ব্রাজিলের এই তারকা প্লেয়ার পায়ের এত বড় অপারেশনের চার মাসের মাথায় বিশ্বকাপের আসরে খেলতে নেমেছে। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে তার ব্যথার জায়গায় লাথি মেরেছে, যার ফলে বারবার সে পরে যায়।
আর্জেন্টিনার মেসি, পর্তুগালের রোনালদো, জার্মানীর মুলার, স্পেনের ইনিয়েস্তারা যেমন দলের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, ঠিক তেমনি নেইমারের বেলাতেও। সে নিজে ভালো করুক বা না করুক সে মাঠে নামলে বাকি ১০ জনের আত্মবিশ্বাসটা বেড়ে যায়। তার খেলার প্রয়োজন আছে। আজকের মেসি একদিনে তৈরি হয়নি। কষ্ঠিপাথর দিয়ে ঘষে ঘষে জাতীয় দলে ১৩ বছরে মেসি এখন পরিণত। ঠিক তেমনি একদিন নেইমারও বিশ্ব কাতারে অনেক উপরে উঠবে।