বাংলাদেশ থেকে দশ লাখ ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে দেশে পাঠাচ্ছে ১ হাজার কোটি ডলার
গত বছর ভারত বাংলাদেশে বসবাসরত দেশটির নাগরিকদের মাধ্যমে ১০ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। অন্তত দশ লাখ ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে কাজ করছেন। একই বছর বাংলাদেশ প্রবাসীদের মাধ্যমে আয় করেছে ১৩.৫৩ বিলিয়ন ডলার। এর আগের বছর বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় নাগরিকরা তাদের আয়ের ৮.৩২০ বিলিয়ন ডলার ভারতে পাঠায়। ২০১৪ সালে এর পরিমাণ ছিল সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার। এত বিপুল পরিমাণ অর্থ ভারতীয় নাগরিকরা বাংলাদেশ থেকে হু-ি বা অবৈধ চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে পাঠালেও দেশটির বিভিন্ন ব্যাংক বিষয়টি রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছে। বৈধ কোনো কাগজপত্র ছাড়া বা অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশ থেকে এধরনের অর্থ পাঠানোর ক্ষেত্রে বিধি নিষেধ থাকলেও হরহামেশা ভারতীয় নাগরিকরা তা করে থাকেন।
বাংলাদেশে হাজার হাজার ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে বসবাস করছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে ২০০৯ সালে অন্তত ৫ লাখ ভারতীয় নাগরিক বিনা কাগজপত্র বা অবৈধভাবে বাংলাদেশে বাস করছিলেন। এনজিও, গার্মেন্টস, বস্ত্র, তথ্য প্রযুক্তি সহ বিভিন্ন খাতে ভারতীয় নাগরিকদের সংখ্যা এখন আরো বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তারা হু-ির মাধ্যমে তাদের আয়ের এক বিরাট অংশ ভারতে পাঠাচ্ছেন। বর্তমানে বাংলাদেশে অবৈধভাবে ভারতীয় নাগরিকের সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছেছে। বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল মাইগ্রেশন অর্গানাইজেশন সূত্রে এমন আভাস পাওয়া গেছে। বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি’র সাম্প্রতিক এক সাংবাদিক সম্মেলনেও এধরনের তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়।
২০১২ সালে ভারতে রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল পঞ্চম স্থানে। ওই বছর বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় নাগরিকরা ৩.৭ বিলিয়ন ডলার পাঠায়। তবে অফিসিয়াল এ হিসেবের বাইরে অবৈধভাবে বাসরত ভারতীয় নাগরিকরা আরো অনেক বেশি অর্থ তাদের দেশে পাঠিয়েছেন। তাদের অধিকাংশই টুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে আসেন এবং থেকে যান। ভারতের পশ্চিম বাংলা, মেঘালয়, আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরাম থেকেই সবচেয়ে বেশি ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে আসেন। ২০১৬ সালে জুলাই মাসে বন্যায় ৪ হাজার ভারতীয় নাগরিক পশ্চিম বাংলা থেকে লালমনিরহাটে এসে আশ্রয় নেন।
তবে সংশ্লিষ্ট মহল বলছে গারমেন্টস, তথ্য প্রযুক্তি খাতে বিদেশি নাগরিক নির্ভরতা কমাতে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সরকারের নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে শিল্পদ্যোক্তারাও এক্ষেত্রে কোনো কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তিন দশক ধরে গার্মেন্টস খাত গড়ে তুললেও এ খাতে প্রশিক্ষিত লোকবলের প্রয়োজন পূরণে স্থায়ী কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। কারিগরী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা বা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে প্রশিক্ষিত লোকবল তৈরির কোনো উদ্যোগ নজরে পড়ে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদে স্থবিরতা সৃষ্টি হচ্ছে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা এভাবে চলে যাওয়ায়। ২০১৬ সালে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ৩৩ বিলিয়ন ডলার হলেও পরের তিন বছর তা বৃদ্ধি পায়নি।
রফতানি আয় ৭ ভাগ বৃদ্ধি পেলেও একই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার আয় সামান্য কমেছে। দি ইন্ডাস্ট্রি থেকে অনুবাদ