সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় দুই মেয়েসহ বাবার মৃত্যু
নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীতে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রাণ গেল দুই মেয়েসহ বাবার। ঢাকা-চট্রগ্রাম রেল সড়কের নরসিংদীর বাদুয়ারচরে নেয়াখালীগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার বাদুয়ারচরে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে স্বামী সন্তানের মৃত্যু দেখে বাকরুদ্ধ স্ত্রী। আপনজন হারানোর বেদনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছে স্বজনরা। স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে হাসপাতালের পরিবেশ। নিহতরা হলেন নরসিংদী পৌর এলাকার বিলাশদী মহল্লার মোল্লা বাড়ির ভাড়াটিয়া হাফেজ মিয়া (৪০), তার কন্যা তারিণ আক্তার (১৪) এবং তুলি আক্তার (০২)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায় নিহতরা সকলেই নোয়াখালী জেলার বাসিন্দা। হাফেজ মিয়া স্থানীয় ভেলানগর বাজারে চা-পান বিক্রেতা। সোমবার বিকেলে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে স্ব-পরিবারে বাদুয়ারচর রেল ব্রিজ এলাকায় ঘুরতে যায়। বাবা-মেয়েসহ আরো অনেকেই রেল লাইনে অবস্থান করে মোবাইলে সেলফি (ছবি) তুলছিলো। এসময় পাশে একটি মাইকে গান বাজছিল। ফলে ঢাকা থেকে নেয়াখালীগামী উপকুল এসক্সপ্রেস ট্রেনটি আসার শব্দ না পাওয়ার লাইনের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। দ্রুত গতির ট্রেনটি তাদের ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই বাবা ও তার দুই শিশু কন্যার ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে নরসিংদী রেলওয়ে ফাঁড়ি পুলিশ দুর্ঘটনাস্থল পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসাপাতালে প্রেরণ করে।
আরও : ইভা অনুপ্রেরণা, গান আমার আশ্রয় : মাহফুজুর রহমান
নিহতের স্ত্রী নাজনিন বলেন, ব্রিজের অল্প একটু সামনে গিয়ে ছবি তুলছিল। হঠা# দেখি ট্রেন এসে গেছে। আমি নেমে আসি। কিন্তু মেয়ে ও তাদের বাবা নামতে পারেনি। পরে দেখলাম লোকজন ধরাধরি করে তার বাবাকে নিয়ে আসছে।
নিহতের ভাই স্বপন বলেন, সকাল থেকেই ঘুরতে যাওয়ার জন্য ভাস্তি কান্না করছিল। তার বায়না রাখতেই ভাই সকলকে নিয়ে বেড়াতে যায়। সন্ধ্যায় খবর পাই ভাস্তিরা ট্রেনে কাটা পরেছে। এরপর খবর পাই ভাইও নাই।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক আবু সায়েম চৌধুরী জানান, বিকেলে ঘুরাঘুরির সময় তারা রেল লাইনে উঠে পরে বলে জানতে পেরেছি। অতিরিক্ত লোক ও পার্শবর্তী নদীতে বিকটশব্দে গান বাজনার ফলে তারা ট্রেনের হর্ণ শুনতে পারেনি। ফলে ট্রেনের ধাক্কায় তিনজনই নিহত হয়। আমরা আইনানুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নিচ্ছি।