ভারতের সাথে পারস্পরিক স্বার্থ নিয়ে সুসম্পর্ক চাই : ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক : সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষার কথা বলে তিস্তা নদীর ন্যায্য হিস্যা পাশ কাটানো জনগণ মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পশ্চিমবঙ্গে দেওয়ার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীতে এক ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেখানে প্রধানমন্ত্রী সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের কথা বলেছেন। এই সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের জন্য তাহলে কী আমরা আমাদের যে বাঁচা-মরার সমস্যা, আমাদের যে পানির সদস্যা, ১৫৮টি নদীর হিস্যা প্রয়োজন, সেসব সমস্যা কী আমরা ভুলে যাব? আমাদের কোটি কোটি মানুষ এই তিস্তা নদীর অববাহিকায় অথবা অন্যান্য নদী যা ভারত থেকে বয়ে আসছে, তার অববাহিকায় যারা বাস করে, তারা কী সুরাহা পাবে না? তাদের জীবন-জীবিকা কি বন্ধ হয়ে যাবে?’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা ভারতের সাথে অত্যন্ত সুসম্পর্ক চাই। সেই সম্পর্ক তো হতে হবে সম্পূর্ণ পারস্পরিক স্বার্থ নিয়ে। আমার স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে অন্যের স্বার্থ পুরণ করা তো আমার কাজ নয়। আজকে আপনার দাবি, আপনি এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। জনপ্রিয় হলে আমার দেশের সমস্যার কথা না বলে আপনি শুধুমাত্র সৌহার্দ সম্পর্ক রক্ষা করবেন, এটা তো এ দেশের মানুষ মেনে নিতে পারবে না।’
মির্জা ফখরুল বলের, ‘১০ বছর ধরে শুনে আসছি, আওয়ামী লীগ এসে গেছে, তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের চুক্তি হয়ে যাবে। আজ পর্যন্ত হয়নি। সীমান্তে আমার লোককে পাখির মতো হত্যা করা হয়। সেই ব্যাপারটি এখনো বন্ধ করতে পারেননি। আজকে রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে প্রথমেই চীন ও ভারতের সাথে কথা বলা উচিৎ ছিল।’
আরও : মালিতে জঙ্গি হামলায় নিহত ২০
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমি বলব, এসব সমস্যা নিয়ে কথা বলুন। এটাই সবাই চায়। আমরা আশা করব, এ দেশের মানুষ আশা করে, তাদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে, যখন দেশের বাইরে দেশের প্রতিনিধি যান।’
রাজধানীর মতিঝিলের হোটেল পূর্বানীর ‘গুলফিশান’ মিলনায়তনে রাজনীতিবিদদের সন্মানে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে। চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদের ইফতার মাহফিলে স্বাগত বক্তব্য দেন।
ইফতার অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, আহসান হাবিব লিংকন, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এমএম আমিনুর রহমান, জামায়াতে ইসলামীর মিয়া গোলাম পারোয়ার, আবদুল হালিম, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুর রকীব, খেলাফত মজলিশের মাওলানা মজিবুর রহমান, বিজেপির আবদুল মতিন সাউদ, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, জাগপার আসাদুর রহমান খান, লেবার পার্টির দুই অংশের মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, হামদুল্লাহ আল মেহেদি, মাহমুদ খান, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, মো. কামাল ভুঁইয়া, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, এনডিপির মনজুর হোসেন ঈসা, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, সৈয়দ মাহবুব হোসেন, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ডিএলের মিজানুর রহমান ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম।
ইফতারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, নিতাই রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা তৈমুর আলম খন্দকার, সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শামা ওবায়েদ, খালেদা ইয়াসমীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য আহম জহির হোসেন হাকিম, এম অহিদুর রহমান, মো. নজরুল ইসলাম, বেলাল আহমেদ, মাওলানা হারুন অর রশীদ, সালমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ফরিদউদ্দিন আহম্মেদসহ নেতাকর্মীরা অংশ নেন।