রাজশাহীতে শিশুর মৃত্যু নিয়ে তুলকালাম
রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী নগরীতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে লক্ষ্মীপুরে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
চিকিৎসকের অভিযোগ, বাচ্চা মারা যাওয়ার পরে রোগীর স্বজনরা তার অফিসে হামলা চালিয়েছেন। আর রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, তাদের ছেলে ‘হত্যার’ বিচার চাওয়ার অপরাধে ছেলের মাসহ তাদের পরিবারের ছয়জনকে মারধর করা হয়েছে।
নিহত শিশুর নাম রাফি। বয়স ১০ মাস। বাড়ি নগরীর দড়িখরবোনা। সন্ধ্যায় পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে গিয়ে শিশুটি মারা যায়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. সানাউল্লাহ শিশুটির চিকিৎসা দিয়েছিলেন।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার শিশুটিকে তার কাছে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আনা হয়েছিল। তিনি শিশুটিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র দিয়ে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা ভর্তি করাননি। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিশুটিকে আবার সন্ধ্যায় নিয়ে আসেন স্বজনরা। তখন শিশুটির অবস্থা খুবই খারাপ ছিল।
ওই চিকিৎসক জানান, তিনি সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন। হাসপাতালে যাওয়ার পরে শিশুটি মারা গেছে। এরপর তারা হাসপাতাল থেকে এসে তার চেম্বারে হামলা চালায়। এতে তিনি খানিকটা আহত হয়েছেন। অন্যান্য রোগীর স্বজনরা এসে তাদের হাত থেকে তাকে রক্ষা করেন।
পপুলার ডায়গনষ্টিক সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটির চাচা রনি ইসলাম, বাবা রানা, দাদা দুলাল, দাদী শরীফা বেগম, ফুপা সাজু, মা রোজিনা খাতুন রোগ নির্ণয় কেন্দ্রটির তৃতীয় তলায় সভাকক্ষে রয়েছেন। মৃত বাচ্চাটিকে একটি টেবিলের ওপরে শুইয়ে রাখা হয়েছে। পরিবারের সবাই শিশুটিকে নিয়ে আহাজারি করছেন।
শিশুটির মা ও বাবা দুজনেই বলেন, বাচ্চা এখানে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক বাচ্চার মুখে গ্যাস দেন। তখনই বাচ্চা মারা যায়। তারপর চিকিৎসক বাচ্চাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বলেন, বাচ্চা মারা গেছে।
চাচা রনি ইসলাম বলেন, হাসপাতাল থেকে এসে তারা চিকিৎসকের বিচার চাইতে গেলে তাদের পরিবারের সবাইকেই এই রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের লোকজন ব্যাপক মারধর করেছে। শিশুটির বাবা, চাচা ও দাদার গায়ের জামাকাপড় ছেঁড়া ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। পুলিশ তখন তাদের ঘিরে রেখেছিল।
পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাক শামীম হোসনে জানান, তারা বিষয়টি নিয়ে বসার চেষ্টা করছেন। পরে কথা বলবেন।
এ ব্যাপারে রাজপাড়া থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। মৃত শিশুর স্বজনরা মামলা করলে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।