আফ্রিকায় দ্রুত প্রবৃদ্ধির দেশ এখন ইথিওপিয়া
নিউজ ডেস্ক : ইথিওপিয়া উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। উঁচু পর্বত আর অনুর্বর মরুভূমির এই রুক্ষ দেশটিতে ৭০টিরও বেশি জাতি ও ভাষার মানুষের বাস। প্রায় ১১ লাখ বর্গ কিলোমিটারের দেশটিতে জনসংখ্যা এখন ১০ কোটির কিছু ওপরে।
দেশটিকে আফ্রিকার প্রাচীনতম স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আখ্যায়িত করা হলেও এ রাজ্যে অর্থনৈতিকভাবে এখনও বৃহৎ শক্তি নাইজেরিয়া।
তবে গত দশক থেকে প্রেক্ষাপট বদলাচ্ছে ইথিওপিয়ার। নীলনদে ৬০০ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মাণাধীন বাঁধ ও আধুনিক রেলওয়েসহ কয়েকটি অবকাঠামো ভিত্তিক মেগা প্রকল্প ইথিওপিয়ার ভাগ্য বদল করার সম্ভাবনা জাগাচ্ছে।
দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের এখনও এক তৃতীয়াংশ আসে কৃষি থেকে। মহা রেনেসাঁ নামের ওই বাঁধ এ খাতে দেশটির আমূল পরিবর্তন আনবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্ব দাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) বলছে, এ বছর সাব সাহারা আফ্রিকায় সবচেয়ে দ্রুত গতির অর্থনীতি হবে দেশটি। আশা করা হচ্ছে চলতি বছর ইথিওপিয়ার প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ।
সংস্থাটি বলছে, গত দশকে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে গড়ে ১০ শতাংশ হারে।
আমেরিকার থিংক ট্যাংকের অর্থনীতিবিদ বিজয়া রমাচন্দ্র বলছেন, ইথিওপিয়ার প্রবৃদ্ধির হার অনেক উঁচুতে। আমি মনে করি- শিল্প উৎপাদনে সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ এই উন্নয়নে অবদান রাখছে।
নীলনদে মহা রেনেসাঁর বাঁধ
২০১৩ সালের মে মাস থেকে নীলনদে ৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম একটি বাঁধ নির্মাণে কাজ শুরু করে ইথিওপিয়া। এটি লম্বায় ১ হাজার ৭৮০ মিটার ও উচ্চতায় হবে ১৪৫ মিটার। ২০১৭ সাল নাগাদ এ প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্মাণ শেষ হলে এটিই হবে আফ্রিকা মহাদেশের সর্ববৃহৎ বাঁধ। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার।
এই বাধের ফলে কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক সফলতা পাওয়ার আশা করছে দেশটির সরকার। তবে এক্ষেত্রে অন্য দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে মনে করছে তারা।
আফ্রিকায় দ্রুত প্রবৃদ্ধিতে ইথিওপিয়ার পরে কারা?
দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্থনীতির দেশ হিসেবে আফ্রিকায় ইথিওপিয়ার পরে জায়গা পাচ্ছে আইভরি কোস্ট। এ বছর দেশটির ৭ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে আশা করছে আইএমএফ। এর পরে আছে রাওয়ান্ডা ৭ দশমিক ২ ও সেনেগাল ৭ শতাংশে।
নাইজেরিয়া কোথায়?
আফ্রিকার অন্যদেশগুলো যখন অর্থনীতিতে দ্রুত বাড়চ্ছে, তখন এ অঞ্চলের বৃহৎ অর্থনীতির দেশ নাইজেরিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে মোটামুটি ধীরগতিতে।
আইএমএফ বলছে, চলতি বছর দেশটির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ২ দশমিক ১ শতাংশ। যা গেলো অক্টোবরে প্রত্যাশা করা হয়েছিল ১ দশমিক ৯ শতাংশ।
সবমিলে চলতি বছর আফ্রিকার প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ৯ শতাংশ।