সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রস্তাবিত সুবিধা নিতে ব্যবসায়ীরা সম্মত হলে চীনের
বাজারে তৈরি পোশাকসহ প্রায় সব পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। তবে এ ক্ষেত্রে আপটায় যে সুবিধা রয়েছে সেটি আর পাওয়া যাবে না। জানা গেছে, বর্তমানে চীনের বাজারে আপটার আওতায় ৮৩টি পণ্যে এবং ডব্লিউটিও-এর আওতায় ৪ হাজার ৭৮৮টি পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশ। আপটার আওতায় শুল্ক সুবিধার ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে ৩৫ শতাংশ এবং শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধার আওতায় ৪০ শতাংশ মূল্য সংযোজনের শর্ত রয়েছে। এই দুটি সুবিধায় চীনের ট্যারিফ লাইনের ৬৫ শতাংশ পণ্যে শুল্ক সুবিধা পায় বাংলাদেশ। তবে এর মধ্যে দেশের প্রধান প্রধান রপ্তানি পণ্যগুলো অন্তর্ভুক্ত না থাকায় চীনের বাজারে প্রচলিত এই বাণিজ্য সুবিধা বাংলাদেশের কোনো কাজে লাগছে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আপটার আওতায় বর্তমানে বিভিন্ন পণ্যে বিভিন্ন হারে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে চীন। তবে এর মধ্যে আমাদের প্রধান প্রধান রপ্তানি পণ্য নেই। ফলে প্রচলিত বাণিজ্য সুবিধা আমাদের জন্য খুব একটা লাভজনক নয়। নতুন প্রস্তাবে আমাদের তৈরি পোশাকসহ ১৭টি পণ্য অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। চীন বলেছে, তারা তামাক ও ভুট্টা ছাড়া বাকি ১৫টি পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেবে। ফলে নতুন স্কিমটি আমাদের জন্য লাভজনক হবে বলে মনে করছে ট্যারিফ কমিশন। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ২০১৫ সালে জিরো ট্যারিফ স্কিম ঘোষণা করার পর ২৪টি দেশ এই সুবিধা নিতে ওই বছরই চীনের সঙ্গে লেটার অব ইনটেন্ট স্বাক্ষর করে। এরপরে আরও ১২টি স্বল্পোন্নত দেশ চীনের সঙ্গে লেটার অব ইনটেন্ট স্বাক্ষর করেছে।
বাংলাদেশসহ কেবলমাত্র দুটি দেশ এই সুবিধা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ফলে শূন্য শুল্কের প্রস্তাবিত সুবিধাও পায়নি বাংলাদেশ। বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি চীনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে এবং বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণও অনেক। দুই দেশের মধ্যে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যের মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলারই চীনের রপ্তানি আয়।
বর্তমানে চীনে রপ্তানি হওয়া বাংলাদেশি পণ্যের মধ্যে তৈরি পোশাক, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া মাছ ও কাঁকড়া, প্লাস্টিক পণ্য, ফুল, সবজি, ফল, মসলা এবং তামাক ইত্যাদি রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে উৎপাদিত প্রক্রিয়াজাত চামড়ার ৬০ শতাংশের বেশি রপ্তানি হয় চীনে। এ ছাড়া অপ্রক্রিয়াজাত চামড়ারও বড় একটি অংশ যায় দেশটিতে।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন