নব্য জেএমবির ‘সিস্টার্স উইং’ সদস্য হুমায়রা গ্রেফতার
রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে হুমায়ারা ওরফে নাবিলা নামে এক নারী জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট এ অভিযান চালায়।
সিটিটিসি বলছে, হুমায়ারা নব্য জেএমবির ‘সিস্টার্স উইংয়ের’ দায়িত্বশীল পথে রয়েছেন। তার স্বামী তানভীর ইয়াসির করিমও নব্য জেএমবিতে সম্পৃক্ত। গত বছরের নভেম্বরে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের ডিসি মুহিবুল ইসলাম খান বলেন, গত বছরের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের র্যালিতে হামলা পরিকল্পনায় হুমায়রা ওরফে নাবিলার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি অন্যতম একজন অর্থদাতা ছিল। তাকে ওই হামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এই কর্মকর্তা বলেন, অনেক আগেই জঙ্গিবাদে হুমায়রার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তারা নিশ্চিত হয়েছিলেন। তার স্বামীকে গ্রেফতারের সময় থেকেই তাকে নজরদারী করা হচ্ছিল।
সিটিটিসি সূত্র জানায়, হুমায়ারা রাজধানীল একটি বিলাসবহুল শপিং মলের মালিকের মেয়ে। তিনি ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ শেষ করেন। পরে মালয়েশিয়ার একটি ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করেন। তার স্বামী তানভীরও নর্থসাউথে পড়ালেখা করেছেন। সেখানেই স্বামীর সঙ্গে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পরেন হুমায়রা।
সিটিটিসির একজন কর্মকর্তা বলেন, গত ১৯ নভেম্বর হুমায়রার স্বামী তানভীরকে গ্রেফতার করার পর তিনি নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা আকরাম হোসেন খান নিলয়ের সঙ্গে যোগসাজশ করে কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। তার স্বামী কারাগারে থাকলেও নিলয় রিমান্ডে রয়েছেন। দু’জনই হুমায়রার জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দেন। তবে হুমায়রা ওই সময়ে অন্তঃস্বত্ত্বা থাকায় তাকে গ্রেফতার না করে নজরদারীর মধ্যে রাখা হয়েছিল। আত্মগোপনে চলে যাওয়ার চেষ্টা করায় তাকে গত বুধবার রাতে গ্রেফতার করা হয়।
অন্যদিকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা থেকে বুধবার নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সক্রিয় সদস্য সাদিয়া আফরোজ নীনা নামের এক ছাত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। নীনা রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান শাখার অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। তিনি হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ধুবনি গ্রামের নুরুল হকের মেয়ে।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার রাতে হাতীবান্ধার নিজ বাড়ি থেকে ওই তরুণীকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে হাতীবান্ধা থানার এসআই আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ওই তরুণীর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন ও জিহাদি ভিডিও পাওয়া গেছে।
লালমনিরহাটের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-বি) হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, সাদিয়া জেএমবির সক্রিয় সদস্য। তার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তাকে রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন জানানো হবে।
সমকাল