পাবনার সেই সমকামী বিয়ের ঘটনায় মামলা
পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহরের বোঁথর গ্রামে ভিন্ন ধর্মের সমকামী যুবক ও কিশোরের বিয়ের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকের পর মামলা রেকর্ডভূক্ত হলে কথিত ‘বর’ গগনের বাবা রাম সরকারকে বুধবার চাটমোহর থানা কর্তৃপক্ষ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে গগনের বাবা অসুস্থ হলে তার মা সুস্থতা কামনা করে পূজা দিতে চেয়েছিল। পরে তাঁর স্বামী সুস্থ হলেও তিনি স্বপ্নে দেখেন যে একটি মুসলিম ছেলের সাথে তার ছেলের বিয়ে দিলে পরিবারের জন্য ভালো হবে,” সে কারণেই ছেলে গগনের সাথে আলামীনের বিয়ে দেন তারা।
এদিকে পুলিশ জানায়, মার্চ মাসের ২৮ তারিখে ১৩ বছর বয়সী ছেলেটি মাদ্রাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। রাস্তায় বৃষ্টি এলে সে একটি দর্জির দোকানে অপেক্ষা করতে থাকে। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় দর্জি ওই ছেলেটিকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যায় এবং কয়েকদিনের জন্য তাকে থাকতে দেয়।
এক পর্যায়ে দর্জির ২৩ বছর বয়সী ছেলের সাথে ১৩ বছর বয়সী ছেলেটিকে ভুল বুঝিয়ে বিয়ে দেয়া হয়। তবে,বিলচলন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী পুলিশের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হন নি।
আলামীন নামের বালকটিকে পুলিশ ‘ভিকটিম’ হিসেবে উল্লেখ করলেও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, উভয় পরিবারের সম্মতিতেই এ বিয়ে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কয়েকদিন আগে একজনকে পুরোহিত সাজিয়ে হিন্দু রীতিতে গোপনে এ বিয়ে করানো হয়। পরে এ ঘটনা এলাকাবাসী জানতে পারে। এরপর আমি বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি।”
চাটমোহর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার বিষয়টিকে ‘সমকামী বিয়ে’ হিসেবেই দেখছেন। তিনি বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ঘটনা সম্পর্কে জানার পর পুলিশকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হয়েছিল। তদন্তে, সমকামী বিয়ের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। এ মুহূর্তে সম্পূর্ণভাবে প্রমাণ করা সম্ভব নয়। তবে সমকামী হিসেবে মোটামুটি প্রতীয়মান হয়েছে।” তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত একটি তদন্তও চালানো হচ্ছে।
চাটমোহর থানার ওসি তদন্ত শরিফুল ইসলাম জানান, ভিন্ন ধর্মের সমকামী বিয়ের এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে হাবিল উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় রাম সরকার ও গগনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ৩)। বর্তমান গগন পলাতক রয়েছে। তাকে ধরার চেষ্টা অব্যাহত আছে। রাম সরকারকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং আলামীনকে তার বাবা মায়ের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।