কোনো মানুষ এরকম করতে পারে!
নিজস্ব প্রতিবেদক : আফগান তরুণী শাকিলা জেরিন। থাকেন কানাডার ভ্যানকুভারে। তার সুশ্রী চেহারা এখন কেবলই স্মৃতি। ২০১২ সালে তার সঙ্গে ঘটে গেছে মর্মান্তিক ঘটনা। আফগানিস্তানে থাকা অবস্থায় তার স্বামী তাকে গুলি করেন। তবে প্রাণে বেঁচে যান শাকিলা।
শরণার্থী হিসেবে কানাডার ভ্যানকুভারে এসেছেন ২০১৮ সালের শুরুতে। শাকিলা জানান, ১৭ বছর বয়সে দুলাভাইয়ের চাপে বয়স্ক এক ব্যক্তিকে বিয়ে করতে বাধ্য হন। বিয়ের রাত থেকেই চলে নির্যাতন।
মারপিট আর ধর্ষণ তার নিত্যসঙ্গী। সাহায্যের আশায় পুলিশের কাছেও গিয়েছিলেন তিনি। তালেবানদের সঙ্গে তার স্বামী ও দুলাভাইয়ের যোগসূত্র রয়েছে বলেও পুলিশকে জানান তিনি।
শাকিলা জানান, পুলিশ তাকে বলেছে, আপনার স্বামী উনি, অস্বাভাবিক কোনো আচরণ করেননি তিনি। আপনার কান কাটেনি, মুখ কাটেনি, নাক কাটেনি। সমস্যা তো দেখি না!
পুলিশ কোনো সুরাহা না করায় নিজের মায়ের বাসায় যান শাকিলা। কয়েক ঘণ্টা পর তার স্বামী সেখানে পৌঁছে গুলি চালান শাকিলাকে লক্ষ্য করে।
শাকিলা বলেন, আমার মুখের অর্ধেকটা কেড়ে নিয়েছে সেই গুলি। আমি হারায় নাক, মুখ, চোখ, দাঁত, চোয়াল সব।
শাকিলার এক বন্ধুর দেয়া তথ্য মোতাবেক, নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে ২০১৭ সালের নভেম্বরে দিল্লিতে কানাডার হাইকমিশনে শাকিলার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। শাকিলা, তার মা ও বোন কানাডার ভিসা পেয়ে যান কয়েক সপ্তাহের মধ্যে। বর্তমানে তিনি কানাডায় আছেন। ৩০ জানুয়ারি সেখানে গেছেন তিনি।
শাকিলা চান, আফগানিস্তানে মানুষের জন্য এখনো অনেক কাজ করতে হবে সেটা কানাডার রাজনীতিবিদরা জানুক। তারা জানুক আফগান মেয়েদেন জীবনটা কতো কষ্টের। আফগান মেয়েদেরও জানিয়ে রাখতে চাই, তারা অনেক শক্ত। নারীদের প্রতি সহিংসতা বন্ধ হোক সেটা খুব করে চাই।
নিজের পুরনো ছবি বারবার দেখেন তিনি। আর ভাবতে থাকেন, কী রকম ছিলেন, আর কী রকম হয়ে গেছেন।
আর ভাবতে থাকেন, কোনো পুরুষ কোনো নারীর সঙ্গে এমন করতে পারে? কোনো পুরুষ কাউকে এভাবে আঘাত করতে পারে? কোনো মানুষ এরকম করতে পারে!