থেমে থেমে এখনও পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা
টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : এখনও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা। প্রত্যাবাসন শুরু করতে গত শুক্রবার দুপুরে ঢাকায় সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিয়াও সোয়ের নেতৃত্বে বৈঠক করা হয়। ওই সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠকে ১ হাজার ৬৭৩ পরিবারের ৮ হাজার ৩২ জন মিয়ানমা নাগরিকের (রোহিঙ্গা) তালিকা মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার ৭২টি পরিবারের ২৮৩ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এছাড়া গতকাল রবিবার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ ও বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ৭ পরিবারে ২০ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক জানান, জল্পনা-কল্পনার পর রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন তরাণ্বিত করতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ৮ হাজার ৩২ জন মিয়ানমার নাগরিকের (রোহিঙ্গা) তালিকা মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা। তারপরও টেকনাফ উপজেলার কোনো না কোনো সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা ঢুকছে বাংলাদেশে। গত শনিবার নতুন করে এসেছে ৭২ পরিবারের মোট ২৮৩ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ। নাফনদীতে বিজিবির সতর্ক অবস্থায় থাকায় রোহিঙ্গারা এখন নতুন পথে সাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে।
তিনি আরও জানান, চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩৮৬টি পরিবারের মোট ১ হাজার ৭২৭ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ এসেছেন টেকনাফে। তাদের সবাইকে টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে পাঠানো হয়েছে।
টেকনাফের সাবরাং হারিয়াখালী ত্রাণকেন্দ্রে দায়িত্বরত জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ও টেকনাফ উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, রবিবার সকাল হতে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত নতুন করে এসেছে ৭টি পরিবারের ২০ জন রোহিঙ্গা। এই রোহিঙ্গাদের প্রথমে সেনাবাহিনীর হারিয়াখালী ত্রাণকেন্দ্রে নেওয়া হয়। এরপর মানবিক সহায়তা ও প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, সুজি, চিনি, তেল, লবণের একটি করে বস্তা দিয়ে গাড়ি যোগে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে পাঠানো হয়েছে। কোনো ভাবে রোহিঙ্গা আসা বন্ধ করা যাচ্ছে না।
উখিয়া ও টেকনাফে ১২টি আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের ৬টি ক্যাম্পের মাধ্যমে রোহিঙ্গা নিবন্ধনের কাজ করেছে বহিরাগমন বিভাগ ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তত্তাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার ও ইউএনএইচসিআরের কর্মীরা। কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত করে মোট ১০ লাখ ৬৮ হাজার ২৩৬ জন রোহিঙ্গাকে নিবন্ধনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।