উটের গায়ে বরফ!
শুনলে মনে হবে স্রেফ গালগল্প। কিন্তু না, যা বলছি সব্ই অক্ষরে অক্ষরে সত্য। ভালুক , শেযাল, তুন্দ্রা-হরিণ বা বল্গা হরিণ নয় বরং মরুভূমির প্রাণি উটের গা এবার ঢেকে গেছে বরফে-তুষারে।
সেটা কোনো ইউরোপ-আমেরিকার শীতপ্রধান দেশে নয়। এমন ঘটনা ঘটেছে মরুভূমির দেশ, গা-জ্বালানো গরমের দেশ বলে পরিচিত সৌদি আরবে।
জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত কারণে কিছুদিন আগে মরুভূমিতে প্রবল বন্যার ঘটনা ঘটেছে। এবার ঘটলো প্রবল তুষারপাতের ঘটনা। তা-ও আবার শতশত, হাজার হাজার মাইল এলাকাজুড়ে।
সংবাদসংস্থাগুলোর খবরে বলা হয়, সৌদি আরবের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় তাবুক এলাকাসহ বেশ কিছু এলাকার শত শত মাইল বরফে পুরোপুরি ঢেকে যায়। গাছপালা, বাড়িঘর, গাড়িঘোড়া সবকিছু ঢাকা পড়ে যায় বরফের ঘন চাদরের তলে। তাপমাত্রা নেমে যায় হিমাঙ্কের নিচে। রাস্তাঘাট পুরোপুরি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
স্থানীয় লোকজনের কাছে এ এক মহা আজব ঘটনা হিসেবে হাজির হয়। প্রচণ্ড শীতের কবলে জবুথবু মানুষ ঘরে বন্দি হয়ে পড়ে। যারা রাস্তায় আটকা পড়েছে তাদের অনেককে রাস্তার পাশে আগুন জ্বালিয়ে গা গরম করার চেষ্টারত দেখা যায়।
এই দুর্ভোগের মধ্যেও বরফ দেখার এই সুযোগকে বিনোদনের উপলক্ষ করে নিয়েছে কেউ কেউ। পশ্চিমাদের মতো অনেককে পাহাড় থেকে বরফ বেয়ে গড়িয়ে নেমে আনন্দ করতে দেখা যায়। অনেকে গাড়ির বা দেয়ালের গায়ে জমা বরফে নাম বা মনের কথা লিখে রাখে।
শুধু সৌদি আরবেই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের এই ধাক্কা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যসব দেশেও পড়েছে। লেবানন, সিরিয়া ও ইরানের অনেক জায়গা চার ফুট বরফের নিচে ঢেকে গেছে। অনেক ছবিতে মরুভূমির প্রাণি উটের সারা গা বরফে ঢেকে যেতে দেখা যায়। আবার কোনো ছবিতে মরুভূমির অনেক স্থান বরফে ছেয়ে থাকতে দেখা গেছে।
যেসব জায়গায় বরফ পড়েনি এমন অনেক দূর দূরান্ত থেকে লোক বরফের কেরামতি দেখতে ছুটে আসছে।তাদের কাছে এ এক ‘আজব বিনোদন’ই বটে!