টানা বসে থাকলে হঠাৎ মৃত্যুও হতে পারে!
দীর্ঘক্ষণ একইভাবে আঁটোসাটো হয়ে বসে থাকলে বা পা ভাঁজ করে একভাবে শুয়ে থাকলে আচমকা মৃত্যুও হতে পারে। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ বিমানযাত্রাতেও আপাত সুস্থ শরীরেও থাবা বসাতে পারে চরম বিপদ! চিকিৎসা পরিভাষায় এর নাম- ‘পালমুনারি ইমবলিজম’।
একটানা চেপে বসে থাকলে বা বেঁকে শুয়ে থাকলে পায়ের শিরায় রক্ত জমাট বাঁধে। পা ফুলে যায়। একে বলে – ‘ডিপ ভেইন থ্রমবসিস’। এরপর, নজর না দিলে সেই জমাট রক্ত শিরা বেয়ে হৃদযন্ত্রে পৌঁছিয়ে তা আচমকা বিকল করে দেয়।
ঠেকে শিখেছিলেন লন টেনিস তারকা সেরেনা উইলিয়ামস থেকে অস্ট্রেলিয় ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন মার্ক ওয়াহ। তবে, দ্রুত চিহ্নিত হওয়ায় সে যাত্রায় বিপদ এড়ানো সম্ভব হয়েছিল। তাই এই বিষয়ে সাধারণ মানুষ আর চিকিৎসকদের সজাগ করতে ময়দানে নেমেছেন ভারতের মিসিসিপির নেসোবা কাউন্টি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সুনীল কুমার। তার মতে, ‘দেরি করলে, মৃত্যুর হার ৪০ শতাংশ। দ্রুত চিনতে না পারলে মৃত্যু ঠেকানো কঠিন। যদিও, দ্রুত চিহ্নিত করলে এটা নিরাময়ের ওষুধ রয়েছে। এমনকি ঠেকানোও সম্ভব। প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। দরকার কিছু উপসর্গ নজরে রাখা। সময়ে সময়ে হাঁটাহাঁটি- নড়াচড়া করা।’ সাধারণ মানুষকে মনে করাতে এই চিকিৎসক তৈরি করেছেন ‘শেক ইট’ নামে অ্যাপ। সেটি গুগল প্লে স্টোরে গেলেই পাওয়া যাবে।
পরিসংখ্যান বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের পর এই কারণে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে প্রতি বছর ৬ লাখ মানুষ এতে আক্রান্ত হয়।
‘ডিপ ভেইন থ্রমবসিস’- এর বিপদের প্রাথমিক উপসর্গ কী? এশিয়ান ভাস্কুলার সোসাইটির একটি গবেষণাপত্র জানাচ্ছে- পায়ের নিচের অংশ ফুলে ওঠা। শ্বাস কষ্ট। বুকে আনচান ভাব। প্রেসার প্রবল ওঠানামা করা। সুনীল কুমারের মতে এর উপসর্গ অনেকটাই হার্ট অ্যাটাকের সঙ্গে মিলে যায় তাই বহু ক্ষেত্রে চিনতে ভুল হয়। নির্দিষ্ট সময় হাঁটা চলা করা, নড়াচড়া করা, ওজন কমানো, ধুমপান বন্ধ করা ও ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণের মাধ্য এ রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।