সরকারের আজ্ঞাবহ তদন্ত কর্মকর্তা : খালেদা জিয়া
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ একজন অতি উৎসাহী ব্যক্তি। আওয়ামী লীগ সরকারের আজ্ঞাবহ কর্মকর্তা। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশীবাজারে বিশেষ জজ আদালতে হাজির হয়ে এই মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য তুলে ধরার সময় তিনি এ কথা বলেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আত্মপক্ষ সমর্থন করে পঞ্চম দিনের মতো বক্তব্য তুলে ধরতে আদালতে হাজির হন খালেদা জিয়া। আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। ৩০ নভেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আত্মপক্ষ সমর্থনে শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য দিতে গিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ ২০০৫ সালে দুদক থেকে চাকরিচ্যুত হন। যে কারণে তিনি আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। তারই ফলশ্রুতিতে আমাদের বিরুদ্ধে তাঁকে কাজে লাগানোর জন্য বেছে নেওয়া হয়। এই কর্মকর্তা বিরাগের বশবর্তী হয়ে স্বার্থান্বেষী মহলের ইচ্ছা ও নির্দেশ অনুযায়ী আমার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করেন ও তদন্ত প্রতিবেদন দেন। আদালতেও আমার বিরুদ্ধে অসত্য সাক্ষ্য দেন। আমার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল জনসম্মুখে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক নেই। অথচ এই কর্মকর্তা আমার নামে মিথ্যা মামলা ও মিথ্যা জবানবন্দি দিয়েছেন।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘হারুন অর রশীদের নিরপেক্ষ অনুসন্ধান ও তদন্ত করার মতো নৈতিক কোনো মনোবল ছিল না। সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে তাদের নির্দেশিত মতে আমার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্ত করে মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছেন।’ এই কথা জানিয়ে খালেদা জিয়া হারুণ অর রশীদের ১৯৭৯ সালের নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ বলে আদালতকে জানান।
আত্মপক্ষ সমর্থন করে পঞ্চম দিনের মতো বক্তব্য তুলে ধরতে আজ আদালতে যান বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ রাজধানীর বকশীবাজারে বিশেষ জজ আদালত-৫-এ আত্মপক্ষ সমর্থন করে তাঁর অসমাপ্ত বক্তব্য তুলে ধরার কথা রয়েছে।
খালেদা জিয়ার বক্তব্য উপস্থাপনের পর দুদকের পক্ষে সরকারি কৌঁসুলি মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্যে ব্যক্তিগত কথাবার্তা এসেছে। ব্যক্তিগতভাবে একজনকে আক্রমণ করা হচ্ছে বলে আদালতের কাছে জানান কাজল।
খালেদা জিয়া জামিন স্থায়ীকরণের জন্য আবেদন করলে আদালত তা নাকচ করে দেন।
২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আসামি হলেন খালেদা জিয়া, তাঁর বড় ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ছয়জন। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এর মধ্যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আর ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আসামি হলেন খালেদা জিয়াসহ চারজন।