ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ জোগাতেই সেই মডেলকে অপহরণ
---
বিনোদন ডেস্ক :নিজের ক্যান্সার চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতেই ব্রিটিশ মডেল ক্লো অ্যালিংকে অপহরণ করেছিলেন অভিযুক্ত অপহরণকারী। ইতালির পুলিশের নথিতে বেরিয়ে এসেছে এই তথ্য।
পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিতে সন্দেহভাজন অপহরণকারী লুকাস হারবা জানিয়েছেন, মিলান শহরের ওই অপহরণের ঘটনায় অপহরণকারীদের সঙ্গে তিনি যোগ দিয়েছিলেন, কারণ তিনি লিউকেমিয়ায় ভুগছিলেন এবং এর চিকিৎসার জন্য তার অর্থের প্রয়োজন ছিল।
এর আগে অ্যালিংয়ের আইনজীবী ফ্রান্সিসকো পেসকি জানান, ২০ বছর বয়সী ক্লো অ্যালিংকে যৌনদাসী হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে বিক্রি করে দিতেই সম্ভবত অপহরণ করা হয়েছিল।
রোববার ইতালির পুলিশ ব্রিটেনের এই মডেলকে উদ্ধার করে জানায়, অপরাধীরা তাকে অনলাইনে নিলামে বিক্রির উদ্দেশ্যে অপহরণ করেছিল। ওই মডেল একটি ফটো শুটে অংশ নেয়ার জন্য মিলানে গিয়েছিলেন। উদ্ধারের পর অ্যালিং বলেন, তিনি মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন।
‘ব্ল্যাক ডেথ’ নামে একটি গ্রুপ ব্রিটিশ এই মডেলকে অপহরণ করে ছয়দিন আটকে রাখে। মিলানের উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়ার ২৬ দিন পর রোববার নিজ বাড়িতে ফিরেন অ্যালিং। তাকে উদ্ধারের পর ইতালির পুলিশ জানায়, মিলানে অবতরণের নামার পরই দুই ব্যক্তি ওই নারীকে আক্রমণ করে এবং নেশার ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে।
এরপর একটি ব্যাগের ভেতর ঢুকিয়ে তাকে গাড়ির বুটে তোলা হয় এবং তুরিন শহরের কাছে এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। ইতালির পুলিশ এই অপহরণের জন্য লুকাস হেরবা নামে এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে। তদন্ত বিভাগের ভাষ্য মতে, অপহরণকারীরা বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ওই মডেলসহ আরো কিছু নারীকে অনলাইন নিলামে তোলে।
সাইটগুলোতে প্রতিটি নারীর ছবির সাথে তাদের বর্ণনা এবং প্রাথমিক মূল্যও দেয়া ছিল। তবে ছবিতে দেয়া নারীদের সবাইকে একই ব্যক্তিরা অপহরণ করেছে কি না- তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে মিলান পুলিশ। কর্মকর্তারা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তারা ‘ব্ল্যাক ডেথ গ্রুপ’ নামে একটি অপরাধী চক্রের সদস্য, যাদের মূল ব্যবসা হচ্ছে নারী পাচার।
আইনজীবী পেসকি জানান, তার মক্কেলকে মধ্যপ্রাচ্যে যৌনকর্মের জন্য কারো কাছে বিক্রির পরিকল্পনা করছিল অপহরণকারীরা। অ্যালিং অপহরণকারীদের সঙ্গে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন, কারণ তাকে মৃত্যুর হুমকি দেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তাকে বলা হয়েছিল, আশপাশে অনেকে তার গতিবিধি নজরে রাখছে। যদি পালানোর চেষ্টা করে বা কোনো চালাকি করে তাহলে তাকে মেরে ফেলার জন্য প্রস্তুত তারা। তাই তিনি ভাবলেন, অপহরণকারীদের সঙ্গে যাওয়াই হবে সবচেয়ে ভালো কাজ। অপহরণকারী এক ব্যক্তি অ্যালিংকে বলেন যে সে তাকে মুক্ত করতে চায়, তা যেভাবেই হোক।’
এদিকে অ্যালিং ওই ঘটনাকে জীবনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, প্রত্যেক মুহুর্তে তিনি তার জীবন নিয়ে শঙ্কার মধ্যে ছিলেন। ওই মডেলের ভাষায়, ‘আমি ইতালি ও ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। তাদের কারণেই আমি নিরাপদে বেঁচে ফিরেছি।’