ড. ইউনুসের জন্য হিলারি বাংলাদেশকে শাসানোর চেষ্টা করেন : দ্য ডেইলি কলার
---
নিউজ ডেস্ক : ওয়াশিংটন ভিত্তিক খবর ও মতামতের ওয়েবসাইট ‘দ্য ডেইলি কলার’ জানিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলমান থাকায় তাকে রক্ষা করতে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বাংলাদেশকে ভয় দেখিয়েছিলেন বলে তারা (ওয়েবসাইট) খোঁজ পেয়েছে।
দ্য কলার-এর ১ আগস্ট সংখ্যায় বলা হয়, ‘ক্লিনটন পরিবারের দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের দাতা মুহাম্মদ ইউনুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত বন্ধে বাংলাদেশকে শাসানোর চেষ্টা করেছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। ’
ডেইলি কলার নিউজ ফাউন্ডেশন-এর অনুসন্ধানী দলের প্রাপ্ত নথিপত্র অনুসারে পত্রিকাটি জানায়, তার মিলিয়নার বন্ধু ও ফাউন্ডেশন-এর দাতাকে সহায়তা করার জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দরিদ্রতম দেশটির বিরুদ্ধে হিলারি ক্লিনটনের কঠোর অবস্থান গ্রহনের বিষয়ে নতুন করে আলোকপাত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের এক অনুরোধের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের প্রদত্ত দুইটি নথিপত্র থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে ‘ইউনুসকে উদ্ধারের লক্ষ্যে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্টেট ডিপার্টমেন্ট, মার্কিন দূতাবাস এবং বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের নিযুক্ত করেছিলেন’।
এতে আরও বলা হয়, ইউনূস রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গ্রামীণ ব্যাংকের আর্থিক অব্যবস্থাপনার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন এবং এর ফলশ্রুতিতে তাকে ওই ব্যাংক থেকে পদচ্যুত করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ইউনুসের মোট সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক এক কোটি মার্কিন ডলার এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অলাভজনক ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে তিনলাখ মার্কিন ডলারের মতো অনুদান দিয়েছেন’।
এতে আরো বলা হয়, গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউনুস ২০১০ সালে আর্থিক অসঙ্গতির অনেকগুলো অভিযোগের মুখোমুখি হন। এর মধ্যে ডেনমার্কের একটি ডকুমেন্টারিতে অভিযোগ করা হয়, তিনি গ্রামীণ থেকে ১০ কোটি মার্কিন ডলার তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরিয়ে নিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘পদ্মা নদীর উপর গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে ইতিপূর্বে অনুমোদিত ১২০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণের বিষয়টি বিশ্ব ব্যাংক বাতিল করতে পারে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সতর্ক করে দিয়ে হিলারি ক্লিনটন বারবার এবং সরাসরি ইউনুসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে শাসাচ্ছিলেন’।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংকের সবচেয়ে বড়দাতা দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এবং দেশটি ২০১১ সালে এই ব্যাংকে ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার দিয়েছে। অন্যদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসাবে সংস্থাটির উপর হিলারির ব্যাপক প্রভাব ছিল।
দ্য কলার-এ মন্তব্য করা হয়েছে, ‘সেতুর ব্যাপারে হিলারি ক্লিনটনের কার্যকলাপের উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম বিশ্বের একমাত্র নারী সরকার প্রধান শেখ হাসিনার ভিত্তি দুর্বল করে দেওয়া এবং তাঁকে হেয় করা। ’ শেখ হাসিনার আশা ছিল, দেশটির অনুন্নত দক্ষিণাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকার সাথে একটি সড়ক-রেল সেতু নির্মাণের মাধ্যমে সংযুক্ত করা গেলে, নূতন নূতন বাণিজ্যিক বিনিয়োগ ও হাজার হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
এতে বলা হয়, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পদ্মা সেতুকে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে শেখ হাসিনার অঙ্গীকারের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
দ্য কলার-এ আরো বলা হয়, ‘হিলারি ক্লিনটনের চাতুর্যময় কৌশল এবং বিশ্বব্যাংককে ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের দাতার পক্ষে ব্যবহারের এই খবর বিচার বিভাগ সম্পর্কিত সিনেট কমিটির একটি চলমান তদন্তকে বিস্তৃত করতে পারে। এই কমিটি দক্ষিণ এশিয়ার ছোট এই দেশটির বিরুদ্ধে তার (হিলারি) চাপ প্রয়োগের কৌশলের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। ’
পত্রিকাটি জানায়, প্রকৃতপক্ষে বিল ক্লিনটন যখন আরকানসাস রাজ্যের গভর্নর ছিলেন তখন থেকেই বিল ক্লিনটন ও হিলারির সাথে ইউনুস-এর বন্ধুত্ব। উভয়ই ক্ষুদ্র ঋণের ধারণায় উজ্জীবিত ছিলেন এবং মুহাম্মদ ইউনুসের ২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির পিছনে বিল ক্লিনটনের তদবিরকেই কৃতিত্ব দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভের সভাগুলোতে ইউনুস নিয়মিত উপস্থিত থাকতেন। ফাউন্ডেশনের ওযেবসাইটে সার্চ করে দেখা যায়, মুহাম্মদ ইউনুসের প্রশংসা করে প্রতিষ্ঠানটি ৪১টি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ইস্যু করেছে।