রোবট কথা না শোনায়, ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ প্রজেক্ট বন্ধ ফেসবুকের
AmaderBrahmanbaria.COM
আগস্ট ২, ২০১৭
---
টেক জায়ান্ট ফেসবুকের সাম্প্রতিক এক ঘটনা ‘টার্মিনেটর টু’র স্কাইনেটের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। সিনেমাতে ভয়ঙ্কর সেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর হাতে মানুষের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখানো হয়েছিলো। তবে এ যাত্রায় ততদূর গড়ায় নি ব্যাপারটা।
বেশ আগেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) নিয়ে কাজ করার কথা জানিয়েছিল ফেসবুক। তবে ‘এআই’ নিয়ে ঠিক কী ধরনের কাজ করছে তারা, তা জানায়নি খোলসা করে। এবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যুতে স্বপ্নের সেই ‘এআই’ এর কাজ বন্ধই করে দিল ফেসবুক। দিন কয়েক আগেই ‘টেসলা’র সিইও এলোন মাস্ক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি নিয়ে কাজ না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গকে। টুইটারে তিনি জানান, জাকারবার্গের এই বিষয়ে ‘জ্ঞান’টাও খুব কম। সেই সময় মাস্কের সঙ্গে জাকারবার্গের কিছুটা কথা কাটাকাটিও হয়। এলোন বলেছিলেন, ‘এআই’ নিয়ে কাজ করা মানব সভ্যতার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। মাস্কের এই সতর্ক বার্তার পর দু’দিনও কাটল না। নিরাপত্তার স্বার্থে ‘এআই’ এর প্রোজেক্টই বন্ধ করে দিল ফেসবুক।
গত রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ফেসবুক জানায়, ‘এআই’ সমৃদ্ধ চ্যাটবটসগুলি (রোবট বিশেষ) হঠাৎই নিজেদের মধ্যে ‘কথা’ বলা শুরু করেছে। যে ভাষায় চ্যাটবটসরা ‘কথা’ বলছে তা মানুষের পক্ষে বোঝা সম্ভবপর হচ্ছিল না। পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগেই তাই ‘এআই’ মেশিনগুলি ‘শাট ডাউন’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেসবুক।
ফেসবুক এআই রিসার্চ ল্যাব (এফএআইআর) জানাচ্ছে, চ্যাটবটসদের নির্দেশ দেওয়ার জন্য ইংরাজি ভাষা ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে ওই মেশিনগুলি নিজেদের মধ্যে এমন একটি ভাষা তৈরি করেছিল যা শুধু ‘এআই’ মেশিনগুলোর পক্ষেই বোঝা সম্ভব। নতুন এই ভাষায় বিশেষজ্ঞদের দেওয়া কোনোরকম নিয়মও মানছে না মেশিনগুলি। তবে ফেসবুকের তরফে জানানো হয়েছে, এরকম ভাবার কারণ নেই যে চ্যাটবটসরা সমস্ত মেশিনের দখল নিতে শুরু করেছিল। আসলে এগুলি নির্দেশ মানছিল না। ফলে এই প্রজেক্টটি বন্ধ করতে বাধ্য হল ফেসবুক।
বহু দিন আগেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি নিয়ে সতর্কবার্তা শুনিয়েছিলেন স্টিফেন হকিং। মানবজাতির জন্য ‘এআই’ যে খুব প্রীতিকর হবে না তাও বলেছিলেন তিনি। সেই আশঙ্কাই এবার প্রায় প্রমাণিত হল ফেসবুকের এই ঘটনার মাধ্যমে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাই মাঝপথেই ‘এআই’ এর কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হল ফেসবুক। দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট।