g কবরে অবাধ্য ব্যক্তিদের প্রশ্নোত্তর ও পরিণতি | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

রবিবার, ৬ই আগস্ট, ২০১৭ ইং ২২শে শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

কবরে অবাধ্য ব্যক্তিদের প্রশ্নোত্তর ও পরিণতি

AmaderBrahmanbaria.COM
জুলাই ৩১, ২০১৭

---

ইসলাম ধর্ম ডেস্ক : ‘মৃত্যু’ নামক শরবতের পেয়ালা নির্ধারিত সময়ে সবাইকেই পান করতে হবে। কোনো জীবের জন্ম যতটা অনিশ্চিত; নির্ধারিত সময়ে মৃত্যুটা তার জন্য সুনিশ্চিত। এটা বাস্তব সত্য এবং আল্লাহ পাকের ঘোষণা।

মৃত্যুর আগে মানুষ যদি কবরের সম্বল গ্রহণ করে; তবে ওই ব্যক্তি পরকালের প্রথম মঞ্জিল কবরে জান্নাতের সুঘ্রাণ ও প্রশান্তি লাভ করে। এটা হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ঘোষণা।

পক্ষান্তরে যারা দুনিয়াতে কুফরি করে বা পরকালের পাথেয় সংগ্রহ করেনি তাদের অবস্থা কেমন হবে। কবরের সাওয়াল-জওয়াব যদি সন্তোষ জনক না হয় তবে তার পরিণতি কেমন হবে, প্রিয়নবি হাদিসে তার সুস্পষ্ট তথ্য তুলে ধরেছেন-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পক্ষান্তরে যারা কাফির হয়, (তাদের) দুনিয়া ত্যাগ করে আখেরাতে পাড়ি জমানোর সময় উপস্থিত হয়, তখন তাঁর কাছে কালো চেহারা বিশিষ্ট ফেরেশতা নাজিল হয়।

তারপর মৃত্যুর ফেরেশতা উপস্থিত হয় এবং তারা মাথার কাছে বসে আদেশ করে, হে হীন অপবিত্র আত্মা! আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও গজবের দিকে বেরিয়ে আস। তখন তার শরীর চূর্ণ-বিচূর্ণ হতে থাকবে।

ফেরেশতারা শরীর থেকে আত্মাকে এমনভাবে বের করবে, যেমনটি ভেজা পশম থেকে বাঁকা কাঁটা বিশিষ্ট লোহা টেনে বের করা হয়।

আত্মা বের করার সঙ্গে সঙ্গে পশমের তৈরি কাপড়ে রাখা হয়, তা থেকে জমিনের সবচেয়ে নিকৃষ্ট দুর্গন্ধ বের হতে থাকে।

ফেরেশতারা তাকে নিয়ে ওপরের দিকে ওঠতে থাকে। যখন কোনো ফেরেশতার দলের পাশ দিয়ে উঠতে থাকে, তখন তারা প্রশ্ন করে, এ হীন ও অপবিত্র আত্মা কার?

তখন ফেরেশতারা জবাবে বলে, (নাম ঠিকানার পরিচ দেয়) সে অমুক ব্যক্তি। ফেরেশতারা আসমানের দরজা খুলতে বলবে। কিন্তু আসমানের দরজা খোলা হবে না।

এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ আয়াতটি পড়েন-
‘তাদের জন্য আসমানের দরজা খোলা হবে না এবং না তারা বেহেশতে প্রবেশ করবে। সুঁই এর ছিদ্র দিয়ে উটের প্রবেশ যেমন অসম্ভব, তাদের বেহেশতে প্রবেশও তেমন অসম্ভব।’ (সুরা আ’রাফ : আয়াত ৪০)

তারপর আল্লাহ বলবেন, তার দফতর সর্বনিম্ন জমিনের সিজ্জিনে’ লিখে রাখো। তারপর তার আত্মাকে জোরে নিক্ষেপ করা হবে। এ প্রসঙ্গে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরআনের এ আয়াতটি পড়েন-

‘যে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে সে যেন আকাশ থেকে পড়ে যায়। এরপর পাখি তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে যায় কিংবা বাতাস তাকে দূরবর্তী স্থানে নিক্ষেপ করে।’ (সুরা হজ : আয়াত ৩১)

পরে তার আত্মাকে দেহে ফেরৎ দেয়া হয় এবং দুজন ফেরেশতা এসে তাকে কবরে বসায় ও জিজ্ঞাসা করে- তোমার রব কে? সে বলে হায়! হায়! আমি জানি না। তোমার দ্বীন কি? সে বলে হায়! হায়! আমি জানি না। প্রেরিত লোকটি কে? সে বলে হায়! হায়! আমি জানি না।

তারপর আকাশ থেকে একজন আওয়াজ দানকারী আওয়াজ দিয়ে বলবে, ‘সে মিথ্যাবাদী।’ তার জন্য জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দাও, জাহান্নামের দিকে একটি দরজা খুলে দাও, যাতে তাপ ও বিষাক্ত হাওয়া আসতে পারে। তার জন্য কবর সংকীর্ণ হয়ে আসে। অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো যেন একটি আরেকটির ভেতরে ঢুকে যায়।

এরপর তার কাছে বিশ্রী চেহারা ও পোশাক পরিহিত গন্ধযুক্ত একজন লোক এসে বলবে, তুমি ক্ষতি ও কষ্টকর জিনিসের সুসংবাদ গ্রহণ কর। আজকের এই দুঃখের দিন তোমার জন্য পূর্ব প্রতিশ্রুতি।

আত্মা জিজ্ঞাসা করবে তুমি কে? লোকটি বলবে, ‘আমিইতোমার মন্দ ও নিকৃষ্ট কাজ। অতঃপর আত্মা বলবে, হে রব! কেয়ামত সংঘটিত কর না।’

এ হলো আল্লাহর অবাধ্য ব্যক্তিদের কবরে অবস্থানকালীন সময়ের কিছু চিত্র। কোনো বিবেকবান মানুষ কিছুতেই আল্লাহর হুকুমের অবাধ্য হতে পারে না। মৃত্যুর ব্যাপারে উদাসীন হতে পারে না।

মানুষের উচিত-
‘মৃত্যুর জন্য সব সময় প্রস্তুতি গ্রহণ করা। পরকালের মর্মান্তিক শাস্তি থেকে বাঁচার লক্ষ্যে দুনিয়াতে ভাল আমল করা। হাদিসে উল্লেখিত বিষয়াবলী উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য বিশেষ শিক্ষা। যা তাকে পরকালের প্রশান্তি লাভে দুনিয়ায় আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে হেফাজত করবে।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন সুন্নাহর বিধি-বিধান যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার সব ধরনের অন্যায় অপরাধ ও অবাধ্যতা থেকে মুক্ত রাখুন। হাদিসে ঘোষিত পরকালের ভয়াবহতা থেকে হেফাজত করুন। আমিন।