g ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হতে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার নতুন জেলা ঘোষনা করার দাবী বিশিষ্টজনদের | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

রবিবার, ২৭শে আগস্ট, ২০১৭ ইং ১২ই ভাদ্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হতে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার নতুন জেলা ঘোষনা করার দাবী বিশিষ্টজনদের

AmaderBrahmanbaria.COM
জুলাই ২২, ২০১৭
news-image

---

ফয়সল আহমেদ খান , বাঞ্ছারামপুর : জেলা সদর ব্রাহ্মণবাড়িয়া হতে প্রায় ৮৫ কি:মি: দূরত্বের হাওড় অধ্যূষিত উপজেলা বাঞ্ছারামপুর উপজেলাকে সহজ যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্ত করতে,-সহজ যোগাযোগযোগ্য নতুন কোন জেলার সাথে যুক্ত করার দাবী জানালেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি,সাবেক যুগ্মসচীব ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো.সিরাজুল ইসলামসহ শতাধিক বিশিষ্ট নাগরিক।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা হতে কড়িতোলা ফেরী ঘাট হতে আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী পৌরসভার বিশনন্দী হতে ২ কি:মি: দীর্ঘ ৩য় মেঘনা সেতুর প্রস্তাব ও সেই বাবদ একনেক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সেতু বিভাগ গত ১৬ জুলাই অর্থবরাদ্ধ দেয়ায় আজ বাঞ্ছারামপুর সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্য্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি ক্যা.এবি তাজুল ইসলাম এমপিকে ধন্যবাদ ও আনন্দ র‌্যালী শুরু হওয়ার আগে এক বর্ধিত সভায় সাবেক সরকারি আমলা ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম এমন দাবী জানান।
মুক্তিযোদ্ধা,উপজেলা আ.লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সাধারন মানুষ,সাংবাদিকসহ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন,-’‘প্রশাসনিক,রাজনৈতিক,্অর্থনৈতিক ও ভৌগলিকসহ সব দিক থেকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর ৮৫ কি:মি: দূরে অবস্থিত। জটিল মানচিত্র,যাতায়াত,সড়ক ব্যবস্থা,আইনী-প্রশাসনিক সহায়তা পেতে সাধারন মানুষকে চরম ভোগান্তির স্বীকার হতে হয়।
এই কারনে,ডিজিটাল প্রযুক্তি ও দিন বদলের সনদ তড়িৎ গতিতে আমরা কাজে লাগাতে পারছি না।সে জন্য দরকার নতুন একটি জেলার।সেটি হতে পারে বাঞ্ছারামপুর,পাশ্ববর্তী কুমিল্লা জেলার হোমনা,তিতাস,মেঘনা,দাউদকান্দি এবং সরকার ইচ্ছে করলে মুরাদনগর বা নবীনগরকে নতুন জেলায় যুক্ত করতে পারে।’’

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মো. নুরুল ইসলাম বলেন,-‘জেলা শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোন প্রশাসনিক কর্মকর্তা(ডিসি, এসপি, ডিইও,জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইত্যাদি)কে নিমন্ত্রণ বা সরেজমিনে পরিদর্শন,মিটিং করতে বাঞ্ছারামপুরে আসার আমন্ত্রণ জানালে ‘সবিনয়ে বা কৌশলে ‘না’শব্দটি উচ্চারন করেন কেবল জটিল যোগাযোগ ব্যবস্থা ও সময়ের কারনে।’’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী প্রিন্সিপাল আবুল খায়ের দুলাল বলেন,-‘একটি অঞ্চলের উন্নয়ন নির্ভর করে,সেই এলাকার সাথে সহজতর যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর।কি রাজনৈতিক,কি অর্থনৈতিক বা সামাজিক,ব্যবসায়িক—সব দিক থেকে বাঞ্ছারামপুরের জনগন পিছিয়ে পড়ছে কেবল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক ও উজানচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাদীদ আল রহমান জনি বলেন,-‘বাঞ্ছারামপুরের জনগন ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতে হবে শুনলেই ‘চমকে’ উঠেন।আমাদের জন্য কুমিল্লা বা ঢাকা যেতে যতোটা না সহজতর তারচেয়ে ১০গুন কঠিন জেলা শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাওয়া-আসা করা।তিনি আরো বলেন,-‘বৃহস্প্রতিবার (২০ জুলাই/২০১৭) জেলায় সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক জেলায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে আসায় আমরা বাঞ্ছারামপুর থেকে শত-শত নেতাকর্মী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে ভোরে বাস,মাইক্রো গাড়ি রিজার্ভ করে যাই।কিন্তু অনুষ্ঠান শেষ করে আসতে আসতে রাত হয়ে যায়,কেবল জটিল সড়ক ও দূরত্বের কারনে’।

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম,বাঞ্ছারামপুর উপজেলা শাখার সভাপতি ও লাইব্রেরী কেন্দ্রিক বই পড়ার আন্দোলন ‘পাঠক সমাবেশের’ আহবায়ক সংবাদকর্মী ফয়সল আহমেদ খান বলেন,-‘সারাদেশে সম্ভবত বাঞ্ছারামপুর উপজেলাই একমাত্র প্রশাসনিক এলাকা যেখানে জেলার দৈনিক পত্রিকা সমূহ বাঞ্ছারামপুরের পাঠকগন পড়তে পারেন না,কেবল জটিল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে।বাঞ্ছারামপুরে বড়মাপের কোন অনুষ্ঠানেও জেলায় কর্মরত সাংবাদিক সহকর্মীদের দাওয়াত দিয়েও আনানো যায় না।এমনও জাতীয় দৈনিক/ টিভির সাংবাদিক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রয়েছেন,যারা বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় কখনোই আসেননি’।

এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রেনী-পেশাজীবির নের্তৃবর্গের সাথে জানা গেছে,সপ্তাহে মাত্র ৫ কর্মদিবসে বাঞ্ছারামপুর হতে মাত্র ১টি মাইক্রোবাস (৮সিটের) জেলায় যাতায়াত করে। এমনই একটি মাইক্রোবাসের চালক মো.মাইনুদ্দিন সরকার বলেন,-‘গাড়ি চালাইতে মন চায় না।মনে হয় ‘কেয়ামতের পুল-সারাতের পুল’ পাড়ি দিচ্ছি কয়েকজন যাত্রী নিয়ে।ভাঙ্গাচোড়া সড়ক.আঁকা-বাঁকা রাস্তা গতি নির্দেশকের জন্য ৮৫ কি:মি: রাস্তা পাড়ি দিতে ৪ থেকে ৫ ঘন্টা লাগে।তার উপর জেলা থেকে আসার পথে যাত্রী পাওয়া যায় না।যারাই আসা-যাওয়া করেন,তাদের প্রায় সবাই জেলা আদালত বা পুলিশ সদস্য আসামী নিয়ে জেলায় যান।সাধারন বা ব্যবসায়ী কোন যাত্রী কদাচিৎ পাওয়া যায়’।

বিশিষ্ট আইনজীবি এডভোকেট মো.জামাল,এড.আমজাদ, এড.কামাল একসুরে বলেন,-‘বাঞ্ছারামপুরের জনগন আইনী সহায়তা সবচেয়ে কম পান কেবল সময় মতো আসামীগন কোর্টে হাজির হতে না পারার কারনে।মহামান্য বিচারকদের একটি আদেশ বাঞ্ছারামপুরে ডাকযোগে যেতে আগে লাগতো ৭দিন এখন,পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় লাগছে ৩ থেকে ৪ দিন।
সরেজমিনে কথা বললে বাঞ্ছারামপুর হতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-জেলার দূরত্বের এই ভোগান্তি ও নতুন জেলার দাবী জানিয়ে কথা বলেন,-‘শিক্ষক,রাজনীতিবিদ,ছাত্রনেতা,ব্যবসায়ী,কৃষক,কুরিয়ার ব্যবসায়ী,ঔষধ বিক্রয় প্রতিনিধি,বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত আসামী,সংবাদকর্মী,আনসার-ভিডিবিসহ বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট নেতৃবর্গ।

এ জাতীয় আরও খবর