g ট্রাম্পপুত্রের সেই বৈঠকে রুশ লবিস্টও ছিলেন | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

শুক্রবার, ২১শে জুলাই, ২০১৭ ইং ৬ই শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

ট্রাম্পপুত্রের সেই বৈঠকে রুশ লবিস্টও ছিলেন

AmaderBrahmanbaria.COM
জুলাই ১৫, ২০১৭

---

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযান চলার সময় ট্রাম্প টাওয়ারে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ও রুশ আইনজীবী নাতালিয়া ভেসেলনিতস্কায়ার মধ্যকার বৈঠকে সাবেক এক সোভিয়েত গোয়েন্দা কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।

রিনাত আখমেতশিন নামে সাবেক ওই সোভিয়েত গোয়েন্দা কর্মকর্তা বর্তমানে রাশিয়ার একজন লবিস্ট। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমকে তিনি নিজেই বিষয়টি জানান। যদিও এর আগে, ট্রাম্প জুনিয়র শুধু জানিয়েছিলেন- গোপন ওই বৈঠকে শুধু রাশিয়ান আইনজীবী ভেসেলনিতস্কায়া উপস্থিত ছিলেন।

বার্তা সংস্থা এপি-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে আখমেতশিন জানান, সোভিয়েত সেনাবাহিনীর কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের কর্মকর্তা ছিলেন তিনি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে গুপ্তচরবৃত্তিতে কোনো প্রশিক্ষণ তাকে দেয়া হয়নি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন। তিনি জানান, ২০০৯ সালে তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব পান। কিন্তু রাশিয়ার নাগরিকত্বও তার রয়েছে।

২০১৫ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি খনি প্রতিষ্ঠান আখমেতশিনের বিরুদ্ধে হ্যাকিংয়ের অভিযোগ এনে একটি মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ওই ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রচারাভিযান সংক্রান্ত প্রাইভেট রেকর্ড হ্যাক করেছে। লন্ডনে আখমেতশিনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যক্তিগত গোয়েন্দাও ভাড়া করে ‘ইন্টারন্যাশনাল মিনারেল রিসোর্সেস’। যদিও আখমেতশিন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তবে বার্তা সংস্থা এপি বলছে, ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, এই ব্যক্তি সম্পর্কে কিছুই জানে না রাশিয়া সরকার।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টকে আখমেতশিন জানান, ভেসেলনিতস্কায়ার ওই বৈঠকের শেষ মুহূর্তে তাকে সঙ্গ দিতে তিনি ট্রাম্প টাওয়ারে গিয়েছিলেন। ভেসেলনিতস্কায়া ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটিতে অবৈধ অর্থ প্রবাহ সম্পর্কে ট্রাম্প জুনিয়রকে জানান।

‘ডিএনসি কিভাবে অবৈধ অর্থ গ্রহণ করছে এটা খুব ভালো ইস্যু হতে পারে’- ভেসেলনিতস্কায়া এমনটিই বলেছিলেন বলে জানান আখমেতশিন। ট্রাম্প জুনিয়র জানতে চান এ বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ আছে কিনা। কিন্তু উত্তরে ভেসেলনিতস্কায়া বলেন, ‘তার কাছে তেমন তথ্য নেই। ট্রাম্প শিবিরকে এ নিয়ে আরো গবেষণা করতে হবে।’

এরপর ট্রাম্প জুনিয়র কিছু জানার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তিনি বলেন, ‘তারা চাইছিলেন, বৈঠকটি যত দ্রুত সম্ভব শেষ হয়ে যাক।’ পরে আখমেতশিন জানান, ‘সত্যিকার অর্থে আমি কখনো ভাবিনি বৈঠকের বিষয়টি এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।’

উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। যৌথ গোয়েন্দা প্রতিবেদনে নির্বাচনে রুশ সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলে। বলা হয়, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পছন্দের প্রার্থী ট্রাম্পকে সহায়তা করেছে ক্রেমলিন। ট্রাম্প ও তার সহযোগীরা অবশ্য বরাবরই এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমস দাবি করে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান পার্টি থেকে ট্রাম্পের মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার দুই সপ্তাহ পর ২০১৬ সালের ৯ জুন নিউইয়র্কে ট্রাম্প টাওয়ারে রুশ আইনজীবী নাতালিয়া ভেসেলনিতস্কায়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ট্রাম্প জুনিয়র। রাশিয়ার ওই আইনজীবীর সঙ্গে ট্রাম্পের জামাতা ও জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জারেড কুশনার এবং তার নির্বাচনী প্রচার অভিযানের প্রধান পল জে ম্যানফোর্টও সাক্ষাৎ করেছিলেন। নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের বিষয়ে তথ্য পেতে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

বৈঠকের বিষয়টি স্বীকার করেছেন ট্রাম্প জুনিয়র। তিনি জানান, হিলারি ক্লিনটন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য নাতালিয়া দেবেন বলে তাকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু নাতালিয়া সেরকম কোনো তথ্যই তাকে দিতে পারেননি। অন্যদিকে, নিজের ছেলেকে নির্দোষ, স্বচ্ছ বলে বক্তব্যও দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তবে সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটি ৩৯ বছর বয়সী ট্রাম্প জুনিয়রকে প্রকাশ্যে সাক্ষ্য দিতে বলেছেন। সূত্র: বিবিসি

এ জাতীয় আরও খবর