g বিদ্যুৎ চুরির মহোৎসব, নদীর তলদেশ দিয়ে অবৈধ লাইন | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বৃহস্পতিবার, ২৪শে আগস্ট, ২০১৭ ইং ৯ই ভাদ্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বিদ্যুৎ চুরির মহোৎসব, নদীর তলদেশ দিয়ে অবৈধ লাইন

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ১, ২০১৭

---

আমিরজাদা চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া॥ বিদ্যুৎ চুরির মহোৎসব চলছে শহরে। বিভিন্ন স্থানে সুকৌশলে বছরের পর বছর ধরে বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে। প্রতিকারহীন ভাবে চুরি চললেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ নিরব। এতে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর দেদারসে চুরির কারণে বাড়ছে মারাত্মক লোড শেডিংও। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কিছু সংখ্যক অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী চুরির কাজে সরাসরি সহায়তা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। লুকোছাপ নয়, খোদ শহরের কারখানাঘাট এলাকাতেই সম্প্রতি বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা ধরা পড়েছে। সে এলাকার এক প্রভাবশালী তার চাতাল মিলের মিটার থেকে অভিনব পদ্ধতিতে তিতাস নদীর পূর্ব পাড়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। তিতাস নদীর ঐ পাড়ে রয়েছে তার মাছ ও মুরগীর খামার। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেছেন, এ ভাবে বিদ্যুৎ লাইন নেয়ার ঘটনা মারাত্মক অপরাধ। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই প্রভাবশালী ব্যক্তির কারখানা ঘাট এলাকায় রয়েছে একটি চাতালকল। এ চাতাল কলের থেকেই তিতাস নদীর তলদেশ দিয়ে বে-আইনী ভাবে নদীর ওপার তার নিজস্ব মুগরীর খামারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। সূত্র বলছে, ওই খামারের জন্য পল্লী বিদ্যুতের একটি বৈদ্যুতিক সংযোগ রয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত সুকৌশলে এ মিটার থেকেই ওই মুরগীর খামারে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আসছে। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে এ প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, মুরগীর খামার এলাকায় ২২ কানি জমির উপর প্রতিষ্ঠিত একটি মৎস্য খামারে একই প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় বলে অভিযোগ আছে। সম্প্রতি বিদ্যুৎ চুরির ঘটনা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হলে প্রকৌশলী আলমগীর, হেবজুল বারীসহ নির্বাহী প্রকৌশলীর নেতৃত্বে একটি দল চাতালকলটি পরিদর্শন করে সত্যতা খুঁজে পায়। সূত্র বলছে, চাতাল কল থেকে যে বৈদ্যুতিক লাইন তিতাস নদীর তলদেশ দিয়ে নদীর পূর্ব পাড় নেয়া হয়েছে সে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়। তবে ৭ বছরে কি পরিমান বিদ্যুৎ চুরি হয়েছে আদৌ চুরি হয়েছে কিনা কর্মকর্তা তা এখনো বের করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ নিশ্চিত করেছে, এ প্রক্রিয়ায় লাইন নেয়া মারাত্মক অন্যায়। এতে জীবন হানির আশংকা রয়েছে। এ ধরনের লাইন নেয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিভাগের কোন অনুমতি ছিল কি না তাও কর্মকর্তারা বলতে পারছে না। এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিদ্যুৎ বিতরন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান বলেছেন, আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানা করা হবে। মামলাও করা হবে। তবে এ ধরনের কাজ মারাত্মক অন্যায়। এদিকে শহরের টেংকের পাড় (লোকনাথ দিঘীর পাড়) প্রধান ফটক এলাকায় একটি চায়ের দোকানে সুকৌশলে সার্ভিস লাইন থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ব্যবহার করে আসছে। অফিস সূত্র জানায়, বিশেষ ব্যক্তিবর্গের সাথে ওই দোকান মালিকের সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে না। স্থানীয়রা বিদ্যুৎ চুরির বিষয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগকে বার বার অবহিত করলেও অগ্যাত কারনে কোন ব্যবস্থা নেয় নি সংশ্লিষ্টরা। এদিকে শহরের টেংকের এলাকায় ও সুকৌশলে বিদ্যুৎ চুরির হচ্ছে বলে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুনিয়াউট থেকে রেলক্রসিং পর্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে বলে স্থানীয় একাধিক লোক জানান।

আমিরজাদা চৌধুরী
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
১/১/২০১৭ইং

এ জাতীয় আরও খবর