ধ্বংসস্তুপের মাঝে সিরীয়দের ইফতার
---
সিরিয়ার অবরুদ্ধ শহর দৌমার বাসিন্দারা ধ্বংসস্তুপের মাঝেই ইফতার করেন। শহরের বাসিন্দাদের এক সঙ্গে ইফতারের এমন কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে বেশ আলোড়ন তুলেছে।
রাজধানী দামেস্কের কাছেই অবস্থিত বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দৌমা এলাকা। এই এলাকার বেশিরভাগই এখন ধ্বংসস্তুপে নিমজ্জিত। কিন্তু এরই মধ্যে সেখানকার বাসিন্দারা এক সঙ্গে ইফতার করার ব্যবস্থা করেছেন।
বাসিন্দাদের জন্য এরকম ইফতারের আয়োজন করেছেন সিরিয়ান আদালেহ ফাউন্ডেশন। এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালে তার কার্যক্রম শুরু করে। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রতি পূর্বাঞ্চলীয় ঘৌটা এলাকায় সহায়তা দেবার লক্ষ্যেই এই প্রতিষ্ঠানটির কাজ শুরু হয়।
রমজানের শেষ দশ দিন এই প্রতিষ্ঠানটি দৌমার বাসিন্দাদের খাবার সরবরাহ করবে। সংস্থাটির তরফ থেকে বলা হয়েছে, ‘বিমান হামলার ভয়ে আমরা সাধারণত এ ধরনের আয়োজন করিনা। কিন্তু সাম্প্রতিক চুক্তির সুবিধা নিচ্ছি আমরা।’
সিরিয়ায় চলমান অবরোধ-সংঘর্ষের জেরে সেখানে খাদ্যের দাম অনেক চড়া। ইফতারির জন্য যে খাবার দৌমায় সরবরাহ দেয়া হয় সেটি তৈরি করা হয় পূর্বাঞ্চলীয় ঘৌটা এলাকায়।
প্রায় চার বছর ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে দৌমা এলাকা। ২০১৬ সালের অক্টোবরের পর গত মাসে প্রথমবারের মতো একটি সাহায্য সংস্থা দৌমায় প্রবেশ করতে পারে। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এই এলাকাটি নিয়ন্ত্রণ করছে জায়েশ আল ইসলাম। গত কয়েক বছর ধরেই এই এলাকাকে লক্ষ্য করে সিরীয় বাহিনী অনবরত বিমান ও বোমা হামলা চালিয়ে আসছে।
শহরের প্রায় একশোর মতো বাসিন্দা এক সঙ্গে ইফতার গ্রহণ করছেন। এদের মধ্যে একজন জানান, বিমান হামলার ভয়ে অনেক সময় তারা মসজিদে লুকিয়ে ইফতার করেন।
সিরিয়ার একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট টুইটারে ছবিগুলো পোস্ট করে লিখেছেন, দৌমায় মৃত্যুর পরিবর্তে আজ জীবনের ছোঁয়া।
আরেকজন টুইটার ব্যবহারকারী এই খাবারকে বর্ণনা করছে ইফতার অব হিরোস বলে। অন্য একজন লিখেছেন, অনেক জটিল পরিস্থিতির মধ্যে এই মানুষগুলো অন্যদের জন্য কাজ করছেন এবং অন্যদের জন্যও উদাহরণ তৈরি করছেন।
ছবিগুলো অনলাইনে প্রকাশের পর হাজার হাজার মানুষ এটি শেয়ার করেছেন এবং নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
ছবিগুলো শেয়ার করে রোজাদারদের সুস্বাস্থ্যও কামনা করেছেন সিরিয়ার নামকরা কয়েকজন সাংবাদিক। অনেকেই বলেছেন, সিরিয়ার ছবিগুলোতে যে শিশুদের দেখা যাচ্ছে তারা সবাই যুদ্ধে পরিবার-পরিজন হারানো এতিম।