জাতিসংঘের সার্কেল অব লিডারে আমন্ত্রণ পাচ্ছেন শেখ হাসিনা
---
কূটনৈতিক প্রতিবেদক : জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অন্যতম বৃহত্ সেনা ও পুলিশ সদস্য প্রেরণকারী দেশ হিসেবে আসন্ন সাধারণ পরিষদে অনুষ্ঠিতব্য ‘সার্কেল অব লিডার’ বৈঠকে আমন্ত্রণ পাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত সোমবার জাতিসংঘ সদর দফতরে যুক্তরাষ্ট্র সফররত পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাত্কালে সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেজ এ কথা বলেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের আবাসিক মিশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়। সাক্ষাত্কালে বাংলাদেশের অসামান্য অগ্রগতি বিশেষ করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দুর্যোগ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার ভূয়সী প্রশংসা করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
শান্তিরক্ষা ও শান্তি নির্মাণে ভূমিকা রাখায় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি জানান, তিনি সব সময় বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলার লড়াইয়ে প্রথম সারিতে দেখতে চান। এছাড়া এসডিজি বাস্তবায়নের অগ্রগতিতেও বাংলাদেশকে সামনের কাতারে আশা করেন তিনি। পররাষ্ট্র সচিব জাতিসংঘের মূল্যবোধ ও নীতিমালার প্রতি বাংলাদেশের অবিচল অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ জাতিসংঘ মহাসচিবের নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল।
তিনি আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় মহাসচিবের অগ্রাধিকার প্রদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া বিগত আট বছরে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যে অগ্রগতি হয়েছে সে বিষয়ে মহাসচিবকে অবহিত করেন পররাষ্ট্র সচিব। বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (জাতিসংঘ) সাদিয়া ফয়জুন্নেছা ও বাংলাদেশ মিশনের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত সোমবার সকালে জাতিসংঘ সদর দফতরে ‘ট্রান্সন্যাশনাল অর্গানাইজড ক্রাইমে’র ওপর একটি হাই লেভেল ডিবেটে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক। ইতালির স্থায়ী মিশন এবং জাতিসংঘের ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম অফিসের (ইউএনওডিসি) সহযোগিতায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি এ ইভেন্টের আয়োজন করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনিদের্শনায় ‘ট্রান্সন্যাশনাল অর্গানাইজড ক্রাইম’ মোকাবেলায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করছে। এ জাতীয় অপরাধ দমনে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী আইনি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। অধিকতর নজরদারি ও কার্যকর বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অবৈধ অভিগমন এবং মানবপাচার ও চোরাচালানের প্রবণতা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রতিষ্ঠা করেছি এবং এটিকে শক্তিশালী করেছি। মানি লন্ডারিং এবং সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন মোকাবেলায় আমাদের টেকসই উদ্যোগগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়া মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র, বন্যপ্রাণী ও সাংস্কৃতিক সম্পদের অবৈধ পাচার রোধে কার্যকর আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর পররাষ্ট্র সচিব গুরুত্বারোপ করেন। এরপর সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত বিদেশি কূটনীতিকদের এক সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে উপস্থিত কূটনীতিকদের কাছে কমিটি অব মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্সের (সিএমডব্লিউ) পুনর্নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে নিজের অবস্থান ও অগ্রাধিকারগুলো তুলে ধরেন।