‘আকারে বড় হলেই ভালো বাজেট হয় না’
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অর্থমন্ত্রী এবার যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন তা ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার। এই বাজেট চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ১৭ শতাংশ বেশি। কিন্তু আকারে বড় হলেই ভালো বাজেট হয় না।
রবিবার সকালে গুলশানে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০১৭-১৮ সালের বাজেট বিষয়ে দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাজেটের মধ্যে ১ লাখ ১২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকার ঘাটতি দেখানো হয়েছে। এই বাজেটের অর্থ কী? এই বিরাট বাজেট ধাপ্পাবাজি ছাড়া আর কিছু না। এই বাজেট মানুষকে বোকা বানানোর বাজেট, এটি প্রতারণার বাজেট।’
তিনি বলেন, জনগণের কাছে অনির্বাচিত সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। এই বঞ্চনার বাজেট জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী একটি স্লোগানের উল্লেখ করেছেন। এটি হলো, ‘উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের’। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিন্তু এই “উন্নয়নের মহাসড়ক” খানাখন্দকে ভরা। এর ওপর দিয়ে চলতে গেলে পদে পদে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।’
বিএনপির এই মহাসচিব বলেন, ‘বাজেটের কিছু কিছু প্রস্তাব আমাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। জনগণের চোখে দৃশ্যমান উন্নয়ন করতে গিয়ে, দ্বিগুণ-চার গুণ অর্থ ব্যয় করে সম্পদের অপচয় করা হচ্ছে। এ ছাড়া দুর্নীতির সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী ব্যাংকে আমানতকারীদের জমানো আমানতের ওপর বিভিন্ন স্লাবে শুল্ক বাড়িয়েছেন। এক লাখ টাকার উপর এবার শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে ৮০০ টাকা। আবার সঞ্চয়কারীর আমানতের পরিমাণ ডেবিট-ক্রেডিট প্রক্রিয়ায় তার একাউন্টে বছরের যে কোনো সময় ১ লাখ টাকা থাকলেই ৮০০ টাকা কেটে রাখা হবে। একদিকে বর্তমানে আমানতের উপর সুদের হার হ্রাস করা হয়েছে। তার ওপর বর্ধিত হারের এই শুল্ক।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমানতকারীরা এখন শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন, তারা কোথায় যাবে। সুদ কমছে, মূল্যস্ফীতির ফলে প্রকৃত সুদের হার ঋণাত্মক হয়ে পড়ছে, এর ওপর বাড়ছে কর। এছাড়া রয়েছে ব্যাংকের লেনদেন জনিত কর্তন। এর ফলে ১ লাখ টাকার আমানতকারী দিনের শেষে টাকা উঠাতে গিয়ে দেখবে মুনাফা তো দূরের কথা, তার মূল আমানত ১ লাখ টাকাও পাচ্ছেন না।
বাজেট বিষয়ে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই বাজেট বিশ্লেষণ করে আমরা যুগপৎ বিস্মিত, ক্ষুব্ধ এবং হতাশ হয়েছি। তাই ব্যাংক আমানতের ওপর অন্যায় ও অনৈতিক বর্ধিত শুল্ক আরোপ বাতিল ও বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট ভোক্তাদের সহনীয় পর্যায়ে হ্রাস করার দাবি জানাচ্ছি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।