বাঞ্ছারামপুর পৌর বিএনপি ও উপজেলা ছাত্রদলের বিতর্কিত কমিটি ঘোষনা
---
ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর পৌর বিএনপি ঘোষনা ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি চুড়ান্ত মনোনয়নের জন্য জেলা বিএনপিতে জমা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ও পুলিশের সাবেক এআইজি এমএ খালেক এবং সাধারন সম্পাদক ভিপি আ.মান্নান বাঞ্ছারামপুর পৌর বিএনপির ৬৩ সদস্য বিশিষ্ট এক তরফা কমিটি ঘোষিনা করে বলে দলের বৃহত ও পুরাতন ও ত্যাগী নেতা অভিযোগ করেন।
এদিকে,নতুন কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি ঝটিকা মিছিল করে স্থানীয় বিএনপির অপর একটি বৃহত(রফিক শিকদার-লিয়াকত ফরিদ-খোক-িভিপি সাঈদ গ্রুপ) অংশ।
খোজ নিয়ে ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে,বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির বিগত ৮ বছর ধরে দলে অভ্যন্তরীন কোন্দল ও নের্তৃত্ব নিয়ে নানান সমীকরনে ৩ ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়।বর্তমানে ৩ভাগে বিভক্ত দলটি নতুন কমিটি নিয়ে আপাত:দৃষ্টিতে ২ অংশে বিভক্ত হলেও মূলত দলটি ঢাকা কেন্দ্রিক ও ফেসবুকভিত্তিক নেতারা পর্দার আড়ালে থেকে পরিচালনা করছেন সাবেক এমপি খালেক ও মাদকসেবী হিসেবে নিজ দলে অভিযুক্ত ভিপি আ.মান্নান।ফলে,দিন দিন বেড়েই চলেছে তৃণমূল আর মূলদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সম্পর্ক।দৃশ্যত গতকাল (শনিবার,৪জুন) দলে ঘোষিত কমিটি নিয়ে টানাপোড়নের ফলে পদ বঞ্চিতরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে।তারা,বিএনপি নেতা মো.নাজির হোসেন,আজিজুল হক খোকা,মাহবুল হাসান মাবলুর নের্তৃত্বে কমিটির বিরুদ্ধে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদ চত্বর হতে রাতে কমিটির বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়ে কয়েক শতাধিক কর্মীনিয়ে মিছিল বের করে প্রতিবাদ জানিয়ে মিছিল বের করে। পরে,পুলিশের বাধার মুখে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে সদর উপজেলার মুসা মার্কেটের সামনে দীর্ঘ ৮ বছর পর একরকম বিনা বাধায় পথসভা করে। পথ সভায় বিগত কমিটির বিভিন্ন পদে আসীন এমন সব নেতারা বেগম খালেদা জিয়ার দৃষ্টি আকর্ষন ও ঘোষিত কমিটি অবিলম্বে বাতিল করে নতুন করে সবার সাথে আলোচনা,আহবায়ক কমিটি গঠন করে সন্তোষজনক কমিটি ঘোষনার দাবী জানান।
বাঞ্ছারামপুর পৌর ছাত্রদল নিয়ে গতকাল দিনভর চলে পদবঞ্চিতদের তোলপাড় খোজ ও কথা বলে বিভিন্ন অভিযোগে জানা গেছে,বিগত ৮ বছর বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সময় দায়ের করা রাজনৈতিক মামলা,হামলা ও ত্যাগী নেতাদের না জানিয়েই সাবেক কমিটি বহাল রেখে । আহবায়ক কমিটি না করেই অর্থের বিনিময়ে বিএনপির সাধারন সম্পাদক ভিপি আ.মান্নানের পরামর্শে সাবেক এমপি ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এমএ খালেক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের কাছে বিতর্কিতদেও ছাত্রদলে টেনে আনা হয়েছে।
ছাত্রদলের বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সাগর,বাবলূ,কালাম,ঝোটনসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পুরাতন নেতা রাতে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, মাদকসেবী মো.আওলাদ হোসেনকে সাধারন সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করে জেলা ছাত্রদলের কাছে নাম উপস্থাপন করেছে অর্থলোভী আ.মান্নান।যিনি মাদকসেবী আওলাদের সাথে এক সাথে নিত্যদিন মাদক সেবন করেন।যা-উপজেলার কাক-পক্ষী থেকে পথের ভিখাড়ীও জানে।এমন নেতাদের দলে ঠাঁই দিলে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কোন আন্দোলন সংগ্রামে দল পেরে উঠবে না। তারা দাবী করেন বলেন,বরং অবিলম্বে সভাপতি হিসেবে প্রস্তাবিত জিসান সরকারের নাম ঠিক রেখে আওলাদকে দল থেকে বহিস্কার করা হউক।নইলে,আমরা বাধ্য হবো,দলের বিরুদ্ধে পথে নামতে।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে শুক্রবার বিকেলে উপজেলা বিএনপি ও ছাত্রদলের অপর বৃহত গ্রুপের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানান,-‘বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হলে কিছু উল্টা-পাল্টা নেতাদের দলে রাখতে হবে।যেমন কুকুর তেমন মুগুর বলে-একটা কথা আছে না!’ তিনি আরো বলেন,-উপজেলা ছাত্রদলে সাধারন সম্পাদক হিসেবে মো.আওলাদ মোল্লা যে মাদক সেবী সেটি আমি বহু আগে থেকেই জানি।তবে,সে আমাকে নিশ্চিত করেছে,জুন মাস হতে আর মাদক সেবন করবে না’।বক্তব্যটি মোবাইলে বাঞ্ছারামপুরস্থ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের সামনে ল্উাড স্পিকাওে শোনানো হয়।এ সময় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা,সাবেক একজন সংসদ সদস্য ও পুলিশের একজন সাবেক এডিশনাল ইন্সপেক্টও অব পুলিশ,-বলতে পারবেন,সেটি কাংখীত নয় বলে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন।গন্যমান্য ব্যক্তিদেও মধ্যে এমএ খালেকের মোবাইলের কথোপকথন শুনেন,বাঞ্ছারামপুর সদও উপজেলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো.ফুল মিয়া,নাজির হোসেন,রফিক,সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন প্রমূখ।
এদিকে,সাবেক সাংসদ এমএ খালেকের বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ছাত্রদল ও পৌর বিএনপিতে বিতর্কিত নেতাদের দলে ঠাই করা নিয়ে শনিবার রাত সাড়ে নয়টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারমপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা (বৃহত্তর কুমিল্লা বিভাগ) ইঞ্জিনিয়ার মো.শ্যামল মুঠোফোনে স্থানীয় কয়েক সাংবাদিককে জানান,-‘একজন সাবেক পুলিশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা ও সাবেক সংসদ সদস্যের এমন মন্তব্য করা ঠিক হয়নি।ছাত্রদল ও পৌর বিএনপির কমিটি টানাপড়েন নিয়ে অভিযোগগুলো আমি অবিলম্বে ম্যাডামকে(বেগম খালেদা জিয়া) জানাবো।’
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপি নেতা ও সাবেক পৌর বিএনপির সহসভাপতি মো.নাজির শনিবার রাতে জানান,-‘আমরা যারা ত্যাগী নেতা-কর্মী আছি তাদের অনেককে যোগ্যতানুযায়ী দলে না রেখে বিতর্কিত ধান্ধাবাজ ও মাদকসেবী উপজেলা সা.সম্পাদক মান্নান ভিপি অর্থের বিনিময়ে অযোগ্যদের দলে ভিড়িয়েছেন।আমরা এই কমিটি মানিনা।ঘোষিত ৬৩ বিশিষ্ট পৌর বিএনপির ৩০ জনই ২/৩দিনের মধ্যে সাংবাদিক সম্মেলন করে পুনরায় কমিটি গঠনের জন্য দাবী জানিয়ে পদত্যাগ করবো।