পাহাড়িদের গ্রামে আগুন: ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : পার্বত্য জেলা রাঙামাটির দুর্গম লংগদু উপজেলা সদরের চারটি গ্রামে পাহাড়িদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় অজ্ঞাত তিন শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা হয়েছে। আটক করা হয়েছে সাতজনকে।
রাঙামাটির পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান শনিবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাফিউল সারোয়ার জানান, লংগদু এলাকায় শুক্রবার রাত থেকে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে, চলছে গ্রেফতার অভিযান। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, তিনটিলা গ্রামটি প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা বলছেন, গ্রামটির ৮৬টি ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। তারা বেশ কিছুটা দূরে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ রাতেই জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইউনিয়ন যুবলীগের এক নেতার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে লংগদু উপজেলা সদরের তিনটিলা পাড়া ও মানিকজুড় ছড়াসহ চারটি গ্রামে পাহাড়িদের বাড়িঘরে আগুন দেয়া হয়। চারটি গ্রামের অন্তত ২০০ ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পাহাড়িরা এ ঘটনার জন্য বাঙালিদের দায়ী করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসন উপজেলা সদর ও আশপাশের এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের চার মাইল (কৃষি গবেষণা এলাকা সংলগ্ন) এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার যুবলীগের লংগদু সদর ইউনিয়ন শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়নের লাশ উদ্ধারের পর এই উত্তেজনার সূচনা। নয়ন ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালানোর কাজ করতেন। সেদিন সকালে মোটরসাইকেলে দুজন যাত্রী নিয়ে তিনি লংগদু থেকে খাগড়াছড়ি যাচ্ছিলেন।
শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের পর নয়নের লাশ লংগদু উপজেলা সদরের বাট্ট্যা পাড়ায় নেয়া হলে সেখান থেকে তার লাশ নিয়ে লংগদু সদরে বিক্ষোভ-মিছিল বের হয়। এক পর্যায়ে কিছু লোক তিনটিলা পাড়া, বাত্যাপাড়া, উত্তর ও দক্ষিণ মানিকজুড় ও বড়াদম এলাকায় পাহাড়িদের ঘরবাড়িতে আগুন দেয় বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।
অন্যদিকে, বাঙালিদের অভিযোগ- নয়নকে হত্যা করা হয়েছে এবং এ ঘটনার সঙ্গে পাহাড়ি কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জড়িত।