পেকুয়ায় খোলা আকাশের নিচে ২০০ পরিবার
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : মোহাম্মদ আলী। পেশায় লবণ চাষী। কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের শরত ঘোনা এলাকার মৃত মোজাহের আহমদের ছেলে। বেড়িবাঁধ ঘেঁষে তৈরি করা কুঁড়েঘরে চার ছেলেমেয়ে নিয়ে বাস করে আসছিলেন।
চলতি মৌসুমে লবণের কাজে কিছু টাকা সঞ্চয় করে সংস্কার করেছিলেন বসতঘরটি। সাগর পাড়ে বসতি গেড়ে কোনোরকম টেনে নিচ্ছিলেন জীবন সংসার। নানা অভাব-অনটন থাকলেও তার একার সল্প আয়ের সংসার খুব সুখেই কাটছিল।
কিন্তু মঙ্গলবার ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা’ লণ্ডভণ্ড করে দেয় তার সুখের সংসার। উড়িয়ে নিয়ে যায় তার ঘরের চাল। বিধ্বস্ত হয় বাড়ি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোনোমতে আশ্রয় নিয়েছিলেন আশ্রয় কেন্দ্রে। পরে সবাই যে যার বাড়ি ফিরলেও বাড়ি ফিরতে পারেননি মোহাম্মদ আলী। আশ্রয় নিয়েছেন প্রতিবেশীর বসতঘরে।
বর্তমানে তিনি ধরণা দিচ্ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচ্ছল আত্মীয়স্বজনদের দ্বারে দ্বারে। বসতঘর সংস্কার করতে প্রয়োজন টাকার।
একইভাবে উপজেলার উপকূলীয় তিন ইউনিয়ন- মগনামা, উজানটিয়া ও রাজাখালীতে বসতঘর পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে দুই শতাধিক পরিবার কেউ আত্মীয়স্বজনের বাড়ি কেউবা দিনযাপন করছে খোলা আকাশের নিচে। সরকারি ত্রাণ সহায়তাও পায়নি তাদের অনেকেই।
মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম বলেন, আমার ইউনিয়নেই দুই শতাধিক বসতঘর সর্ম্পূণ বিধ্বস্ত হয়েছে। মাথা গোজার ঠাঁই হারিয়েছে প্রায় এক হাজার মানুষ। ঘূর্ণিঝড়ে ইউনিয়নের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এত কম কেন বলছে, তা আমার বোধগম্য নয়। এছাড়া ক্ষয়ক্ষতির বিপরীতে বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। যা আমাদের বিতরণ করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল করিম বিবার্তাকে বলেন, সরকার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। উপজেলায় ঘুর্ণিঝড় আক্রান্তদের মাঝে ইতিমধ্যে ২৩ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বসতঘরের তালিকা তৈরি হচ্ছে। তাদের ঘর সংস্কারে সরকারিভাবে অনুদান দেয়া হবে।