শিল্পী সমিতির নির্বাচন: আদালতের স্থগিতাদেশ স্বত্বেও একপক্ষের শপথ গ্রহণ
বিনোদন প্রতিবেদক : বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ফলাফল স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতের বিচারক এই আদেশ দেন। ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নেজারত শাখার এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার নেজারত শাখার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
এদিকে আদালত সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনের ফল স্থগিত চেয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতের একটি মামলা করা হয় (মামলা নম্বর ১৫০/১৭)। মামলাটি করেছেন সদ্য শেষ হওয়া নির্বাচনে ওমর সানী-অমিত হাসান প্যানেলের প্রার্থী রমিজ উদ্দিন। তার মামলায় সমিতির নির্বাচনের ফলাফলে অন্তর্র্বতীকালীন নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নতুন কমিটির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা যায়, নির্বাচিত ২১ জন ছাড়াও গত বৃহস্পতিবার আদালত থেকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান মনতাজুর রহমান আকবর, আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন দিলু, শিল্পী সমিতির সভাপতি শাকিব খান এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে আদালত এই নির্দেশনা দেয়।
এদিকে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা স্বত্বেও শপথ নিয়েছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির নবনির্বাচিত কমিটি। শুক্রবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) ওই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ২১ সদস্যের নবনির্বাচিত কমিটির মধ্যে শপথ নিয়েছেন একপক্ষের ১১ জন। অন্য ১০ জন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন। বিকেল ৫টায় ওই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নির্বাচন কমিশনার মনতাজুর রহমান শপথবাক্য পাঠ করান নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি মিশা সওদাগরকে। এরপর মিশা সওদাগর অন্য ১০ জনকে শপথবাক্য পাঠ করান। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা, রোজিনা, নাসরিন প্রমুখ। এদিকে কমিটির একাধিক নির্বাচিত সদস্য অভিযোগ করে এ প্রতিবেদককে জানান, শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের খবর তাঁদের দেওয়া হয়নি। তাঁরা জানতেনই না যে শুক্রবার শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান।
এ ব্যাপারে নব নির্বাচিত কমিটির সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক জাকির হোসেন জানিয়েছেন, আমি নির্বাচিত হয়েছি। শপথের আয়োজন করা হচ্ছে জানলে আমি অবশ্যই যেতাম। কিন্তু আমাকে জানানো হয়নি। বিষয়টি লজ্জাজনক।
একই অভিযোগ কমিটির সদস্য নায়িকা মৌসুমীর। তিনি শুক্রবার বিকেলে মোবাইলে এ প্রতিবেদককে বলেন, শুক্রবার যে শপথ অনুষ্ঠান হবে তা আমাকে জানানো হয়নি।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্বেও কেনো শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন; এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে থাকা মনতাজুর রহমান আকবর বলেন, আদালতের চিঠি এখনও আমরা হাতে পাইনি। আদালত ক্ষমতা হস্তান্তর করতে নিষেধ করেছেন কিন্তু শপথগ্রহণে তাঁরা নিষেধাজ্ঞা জারি করেন নাই।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক (২০১৭-১৮) নির্বাচনে মিশা সওদাগর সভাপতি এবং জায়েদ খান সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন। এবারের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে লড়েছে তিনটি প্যানেল। নির্বাচনে মোট ২১টি পদে লড়েছেন ৫৯ প্রার্থী। ভোটার সংখ্যা ছিল ৬২৪ জন। প্যানেল ছিল তিনটি- ওমর সানী-অমিত হাসান, মিশা সওদাগর-জায়েদ খান ও ড্যানি সিডাক-ইলিয়াস কোবরা প্যানেল।