নাসিরনগর হামলায় গ্রেফতার : ইউপি চেয়ারম্যান আঁখি অবশেষে কারামুক্ত
তৌহিদুর রহমান নিটল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু মন্দির ও ঘর-বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কারান্তরীণ সন্দেহভাজন ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি উচ্চ আদালতের মার্ধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়েছেন। জেলা কারাগারের জেল সুপার নূরুন্নবী ভূইয়া জানান , আদালতের জামিনের প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়েঁ পাচঁটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পায় আঁখি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতের পুলিশ পরিদর্শক (ইনস্পেক্টর) মাহবুবুর রহমান জানান, দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখির উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পরিপেক্ষিতে বৃহস্পতিবার জেলা জজ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন ।
প্রসঙ্গত, নাসিরনগর হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখির নাম বেরিয়ে আসলে তিনি গা ঢাকা দেন। এরপর গত ৫ জানুয়ারি ঢাকার ভাটারা থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। পর্যায়ক্রমে নাসিরনগর থানায় আখিঁর বিরুদ্ধে মন্দিরে হামলা ও বাড়িঘরে ভাংচুরের ঘটনায় পর্যাক্রমে তাকে চারটি মামলায় আসামি করা হয়। এসব মামলায় আদালতে তোলা হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েক দফা রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এছাড়া ১৫ জানুয়ারি আঁখিকে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
উল্লেখ্য, গেল বছরের ২৯ অক্টোবর ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফ নিয়ে ব্যাঙ্গচিত্র পোস্ট দেয়ার অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মামলায় গ্রেফতার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ (৩০) দাসের ফাসিঁর দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে নাসিরনগর উপজেলা। পরদিন (৩০ অক্টোবর) সমাবেশ ডাকে দুটি ইসলামী সংগঠন। সমাবেশ শেষ হওয়ার পরপরই দুষ্কৃতকারীরা নাসিরনগর উপজেলা সদরে হামলা চালিয়ে অন্তত ১২টি মন্দির ও অর্ধ-শতাধিক ঘর-বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এরপর দুষ্কৃতকারীরা পর্যায়ক্রমে আবারও উপজেলা সদরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ৬টি ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় পৃথক ৮টি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলোতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাসহ ১২২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।