বুধবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০১৭ ইং ১৩ই বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণ প্রশ্নে কি এক হচ্ছে ইসলামী দলগুলো?

AmaderBrahmanbaria.COM
এপ্রিল ২২, ২০১৭

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলন নামে একটি সংগঠন শুক্রবার ঢাকায় এক সমাবেশ করে রোজার আগেই সুপ্রিম কোর্টের সামনে থেকে ভাস্কর্য অপসারণের জন্য সরকারকে আলটিমেটাম দিয়েছে।

এর আগে দেশটির সবচেয়ে বড়ো ইসলামপন্থী দল- জামায়াতে ইসলামীও এক বিবৃতিতে এই ভাস্কর্য সরানোর দাবি জানিয়েছে।

এই দাবিতে আরো আগে থেকেই আন্দোলন করে আসছে হেফাজতে ইসলাম।চরমোনাই পীর হিসেবে পরিচিত মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিমের দল ইসলামি আন্দোলন শুক্রবার ঢাকার বায়তুল মোকাররমের সামনে এক বড় সমাবেশ করে।

সেখানে রোজার আগেই ভাস্কর্য অপসারণ না হলে সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও করে তাদের ভাষায় মূর্তি উচ্ছেদের কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে দলটি।

শুধু ইসলামী আন্দোলনই নয়, গত কিছুদিন পর বাংলাদেশের ছোট বড় সব ইসলামপন্থী সংগঠনকেই এ ভাস্কর্য ইস্যুতে একই সুরে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে।

বিশেষ করে সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামসহ কওমি মাদ্রাসাগুলোর সংগঠনের নেতাদের সাথে বৈঠকে ভাস্কর্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পর ভাস্কর্য অপসারণের বিষয়ে সোচ্চার দেখা যাচ্ছে এসব দল ও সংগঠনকে।
হেফাজত ইসলামের মতো সংগঠনগুলোর বাইরে, এর মধ্যে যেমন রয়েছে বিরোধী বিএনপির সাথে জোটে থাকা জামায়াতে ইসলামী সহ কয়েকটি দলও, আবার রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন বলে দাবি করে সেই ওলামা লীগও।

এই যে সব দলের একই সুর দেখা যাচ্ছে সেটি কি ইসলামপন্থী দলগুলোকে একই মঞ্চে নিয়ে আসার মতো পরিস্থিতি তৈরির সুযোগ করে দিতে পারে ?

এমন প্রশ্নের জবাবে সরকার পন্থী হিসেবে পরিচিত শোলাকিয়ার ইমাম ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেন এখন যা হয়েছে তা সবাই নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে হয়েছে।

“এটার মাধ্যমেই যে সবাই মিলে ভবিষ্যতে সব বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হবেন সেটি অতি আশাবাদ হয়ে যাবে।”
বাংলাদেশে আগেও বিভিন্ন সময় নানা ইস্যুতে একই সুরে আন্দোলনে নেমেছিলো ইসলামপন্থী সংগঠনগুলো।
মিস্টার মাসউদ বলছেন পরে সে ঐক্য নানা কারণে আর বেশিদিন টেকেনি।

তিনি বলেন, “পরস্পরের দূরত্ব এতো বেশি যে এককথা বললেও একজন আরেকজনের কাছে আসা সহ্য করতে পারেনা।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক আমানুল্লাহ কবীর বলছেন ইস্যু ভিত্তিক আন্দোলন তারা করতে পারে কিন্তু এক মঞ্চে আসা তাদের পক্ষে সম্ভব হবেনা।

“ইস্যু ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হবার সম্ভাবনা আছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ হেফাজতকে কাছে টেনেছে। আর জামায়াত তো বিএনপির সাথেই আছে। আবার এরশাদও জোট করার চেষ্টা করছে। সে সুযোগই ইসলামপন্থী দলগুলো নিচ্ছে বলে মনে হয়।”

ভোটের রাজনীতির হিসেব নিকাশই ইসলামপন্থীদের দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে এখন বড় হাতিয়ার হয়ে উঠেছে বলে একমত পোষণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ মনজুরুল ইসলামও ।

তার মতে এক জায়গায় ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলেও ইস্যু ভিত্তিক ঐক্যের মাধ্যমেই তারা যথেষ্ট শক্তি সঞ্চয় করতে পারে যেটি তাদের দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি বলেন, “প্লাটফর্ম না হলেও তাদের দাম দরের সুযোগ বাড়বে। সরকার ও বিরোধী দলের ওপর চাপ তৈরি করে সুযোগ নিতে পারবে। হেফাজত যেমন কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতিসহ কিছু দাবি আদায় করে নিয়েছে।
আর ইসলামপন্থী সংগঠনগুলো এক মঞ্চে আসতে পারুক আর না পারুক পাঠ্যপুস্তক ইস্যুর পর ভাস্কর্য ইস্যু-এর ধারাবাহিকতায় এসব সংগঠনগুলোর দাবি দাওয়া তালিকা ঠিক কতদূর যেতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা রয়েছে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে। গ্লোবাল নিউজ