এসএসসি, এইচএসসি ছাড়া মাস্টার্সের মান দেওয়া নতুন কিছু নয় : ইয়াহইয়া মাহমুদ
নিজস্ব প্রতিবেদক : এসএসসি, এইচএসসি ছাড়া কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ স্তরকে মাস্টার্সের স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণাকে ভিন্নভাবে দেখার কিছু নেই বলে অভিমত জানিয়েছেন কওমি শিক্ষাসনদ স্বীকৃতি বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব শাইখুল হাদিস আল্লামা ইয়াহইয়া মাহমুদ। তিনি বলেন, ইসলামিক স্টাডিজের এমএ’র মর্যাদা নতুন কিছু নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে এমএ’র মান না থাকলেও একটা মর্যাদা ছিল। পরে জিয়াউর রহমানের আমলে তা বাতিল করা হয়েছিল। কওমি মাদরাসা দাওরায়ে হাদিসের সনদকে ইসলামিক স্টাডিজ ও আরবি সাহিত্যের মাস্টার্স (স্নাতকোত্তর) ডিগ্রির সমমর্যাদা দেওয়ার ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়।
আশির দশকে জাতীয় মসজিদের সাবেক খতিব মাওলানা উবায়দুল হকের সরকারি আলিয়া মাদরাসার হেড মাওলানার দায়িত্বের কথা উল্লেখ করে মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ আরো বলেন, মাওলানা উবায়দুল হক (রহ.) এর পদ ছিল জয়েন্ট সেক্রেটারি পর্যায়ের। অথচ তার কোনো সরকারি সনদ ছিল না। শুধু কওমি মাদরাসার সনদই ছিল। প্রশ্ন উঠেছিল তাকে স্কেল দেওয়া হবে কি না। তখন একটা কমিটি গঠন করা হয়। ঢকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যারাবিক ও ইসলামিক স্টাডিজের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন ডক্টর মুহাম্মদ ইসহাক। তার সভাপতিত্বে ওই কমিটি যাচাই-বাছাই করে এই সিদ্ধান্ত দিয়েছিল যে, কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের মান কেবল অ্যারাবিক ও ইসলামিক স্টাডিজেরই নয়, বরং তার চেয়ে বেশি। এর প্রমাণ আমরা পরে দেখতে পাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ ও অ্যারাবিকের সাবেক একজন প্রফেসর শেখ আবদুর রহিমকে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে দাওরায়ে হাদিস পড়তে পাঠানো হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা মাহমুদ আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ২০ লাখ শিক্ষার্থীর জীবনে গতিসঞ্চার করেছেন। তাতে দেশের একজন মহৎ ও উদার অভিভাবকের পরিচয় দিয়েছেন প্রধানমনত্রী। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কওমি ঘরানার প্রায় ৩ কোটি মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন। তাই কওমি শিক্ষাসনদ স্বীকৃতি বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন জানাই। এ ছাড়াও শিক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব, ধর্মবিষয়ক সম্পাদকসহ মুফতি আহমদ শফী, বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ও জাতীয় দ্বীনী শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়ে ইয়াহইয়া মাহমুদ বলেন, ১১ এপ্রিলের কওমি সনদের স্বীকৃতির ঘোষণার পর প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। আমরা আশা করবো, খুব শিগগিরই সংসদে পাশ করে এই ঘোষণাকে একটি আইনে পরিণত করার ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।