বর্ষবরণের এত জাঁকজমক উদযাপন বিশ্বে বিরল

---
মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে গত বছর স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো।
ইউনেস্কোর ঘোষণার পর এ শোভাযাত্রাকে নিয়ে বাঙালিরা প্রথমবারের মতো নতুন উন্মাদনায় মেতে ওঠেছে। এর সঙ্গে শামিল হচ্ছেন বিদেশিরাও।
শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। সংস্কৃতিপ্রেমীরা এ শোভাযাত্রায় অংশ নিতে সকাল থেকেই ভিড় জমাতে শুরু করেন চারুকলায়। সবার সঙ্গে শোভাযাত্রায় অংশ নিতে চারুকলায় এসেছেন বেলারুশ থেকে আগত পঞ্চাশোর্ধ জেসিফা মিলানা। তার মতে, বর্ষবরণের এত জাঁকজমক উদযাপন বিশ্বে বিরল।
জেসিফা মিলানা বলেন, ‘এত সুন্দর উদযাপন আমি আগে কখনো দেখিনি। এখানে সবাই এক সঙ্গে এসে মিলিত হয়েছে। ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনও অনেক সুন্দর। তবে ইংরেজি বর্ষবরণের সঙ্গে বাংলা নববর্ষের অনেক ফারাক রয়েছে। এখানে আলাদা একটি সংস্কৃতি রয়েছে, যা এখানকার লোকেরা লালন করছে বহু বছর ধরে।’
জেসিফা ঢাকায় এসেছেন বৃহস্পতিবার রাতে। তারা পাঁচ সদস্যের একটি দল ঢাকায় এসেছেন বাংলা নববর্ষ দেখতে। এদের মধ্যে ইউরোপের অন্যান্য দেশের নাগরিক রয়েছেন। এ দলটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক উৎসবে অংশ নেয়।
জেসিফার সফরসঙ্গী রয়েছেন মিলান স্টুয়ার্ড। তিনি সুইডেন থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলা বর্ষবরণে অংশ নিতে তিনি বৃহস্পতিবার রাত থেকে উদগ্রীব ছিলেন। রাতে বন্ধুদের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলাপ করেছেন।
মিলান স্টুয়ার্ড বলেন, ‘আসলে আমি রাত থেকে উদগ্রীব ছিলাম যে এই উৎসবে শামিল হব। বৃহস্পতিবার রাত বললে কিছুটা কম হবে। খুব আগ্রহ নিয়ে এখানে এসেছি। পয়লা বৈশাখ, মঙ্গল শোভাযাত্রা, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল এসব সম্পর্কে আমি ইন্টারনেটে অনেক পড়েছি। এখন এসব দেখে যাব। ভাল লাগছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি অনেক দেশের ঐতিহ্যবাহী উৎসবগুলোতে অংশ নিয়েছি। কিন্তু এত কালারফুল, কালচার্ড এবং আবেগী উৎসব খুব কমই দেখেছি। এখানের মানুষগুলো খুব আবেগপ্রবণ।’
বাংলাদেশে নিরাপত্তাজনিত কোনো শঙ্কা অনুভব করছেন কি না, জানতে চাইলে জেসিফা ও মিলান বলেন, ‘এখানে যে নিরাপত্তা চোখে পড়ছে তা দেখে মনে হচ্ছে না কারো নিরাপত্তা শঙ্কা অনুভব করা উচিৎ। এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্যিই প্রশংসনীয়।’