মুসার বিরুদ্ধে তিন মামলার প্রস্তুতি
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী স্বঘোষিত ধনকুবের প্রিন্স মুসা বিন শমসেরের ব্যবহৃত একটি রেঞ্জ রোভার গাড়ি ফাঁকি দিয়ে আনার অভিযোগে বুধবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডি থেকে জব্দ করা হয়। আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বিয়াই মুসার গাড়িটি জব্দের পর তিনটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
বুধবার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মঈনুল খান বলেন, আটককৃত গাড়িটি এখন আমাদের হেফাজতে রয়েছে। আমরা সেটি শুল্ক বিভাগের গোডাউনে হস্তান্তর করব। আর অভিযুক্ত মুসা বিন শমসেরকে আমরা নোটিশ করব। শুল্ক আইন ও মানিলন্ডারিং আইনে তদন্ত শেষে মামলা করা হবে। এছাড়াও আমরা তার তথ্য গোপন করে গাড়ি আনার ঘটনাটি দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানাবো। তারাও মুসা বিন শমসেরের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
ড. মঈনুল খান বলেন, তিনটি আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। প্রথমটি শুল্ক ফাঁকির দায়ে শুল্ক আইনে, দ্বিতীয়টি বিআরটিএ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে গাড়িটি রেজিস্ট্রেশন হয়েছে সেখানে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের মামলা হবে এবং তৃতীয়টি মানি লন্ডারিং আইনেও তার নামে মামলা করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী টনি ব্লেয়ারকে ৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়ার প্রস্তাব দিয়ে আলোচনায় আসেন বাংলাদেশের এই ব্যবসায়ী।
এর আগে একটি দৈনিকে মুসার ৫১ হাজার কোটি টাকা থাকার খবর ছাপা হওয়ার পর ২০১১ সালে তার বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো অনুসন্ধানে নেমেছিল দুদক। কিন্তু পরে সেই প্রক্রিয়া আর এগোয়নি।
২০১৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়েছিলেন মুসা।
এরপর ২৮ জানুয়ারি আলোচিত-সমালোচিত এই ব্যবসায়িকে আবারো জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে মুসা দাবি করেন সুইস ব্যাংকে তার অ্যাকাউন্টে ১২ বিলিয়ন ডলার আছে। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৯৩ হাজার কোটি টাকা। এর এক-তৃতীয়াংশ পদ্মা ব্রিজ নির্মাণে ব্যয় করতে চান বলেও তিনি সেই সময় জানিয়েছিলেন।
তার এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নড়ে-চড়ে বসে প্রশাসন। বিষয়টির সত্যতা উদঘাটন করতে বাংলাদেশ থেকে একটি টিম সুইজারল্যান্ডে যায়। এরপর সুইস ব্যাংকে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হওয়া যায়, আদৌ মুসার কোনো অর্থ সুইস ব্যাংকে নেই। এ মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজেকে জাহির করার অভিযোগেও মুসার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।