মঙ্গলবার, ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ইং ২রা ফাল্গুন, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

কি পদ পাচ্ছেন আবুল হোসেন?

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৭

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেন। পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতি চেষ্টায় অভিযোগ একটি নয় দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদ হারাতে হয় তাকে।

দুর্নীতি চেষ্টার অভিযোগে প্রথমে আবুল হোসেনকে সরিয়ে দেয়া হয় যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে। পরে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদকের পদ থেকেও তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। পদ হারানোর পর তাকে সহ্য করতে হয় জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন সমালোচনা।

বর্তমানে সব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন আবুল হোসেন। পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগের মামলা কানাডার আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আবারও আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বে আসছেন আবুল হোসেন এমনটি শোনা যাচ্ছে। তবে কী পদে আসছেন সেটাই এখন প্রশ্ন।

আওয়ামী লীগের কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবুল হোসন চাইলে তিনি আগের পদে ফিরতে পারেন। দলের ২০তম সম্মেলনের পরে বিভিন্ন পদগুলো পূরণ করা হলেও আর্ন্তজাতিক সম্পাদকের পদটি এখনো খালি রয়েছে। সেখানেই আবুল হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। অথবা তাকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবেও অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।

নেতারা জানান, পদ্মাসেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় সরকার তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়। আর তদন্তের স্বার্থেই আবুল হোসেনকে মন্ত্রী এবং দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। আর আবুল হোসেনও সরকার এবং দলকে সাহায্য করেছেন। আবুল হোসেন যে দুর্নীতি করেন নাই বিষয়টি আদালতের রায়েও প্রমাণ হয়েছে। দলের প্রতি আনুগত্য থাকায় দলীয় হাইকমান্ড তাকে উপযুক্ত সন্মান দেবে।

সৈয়দ আবুল হোসেন আওয়ামী লীগের ১৯তম কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। এ পদে তাকে সরিয়ে ফারুক খানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০তম সম্মেলনের পরে ফারুক খান পদোন্নতি পেয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন।

আবুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, দুর্নীতির অসত্য অভিযোগ তুলে সৈয়দ আবুল হোসেনের মতো একজন মার্জিত ব্যক্তিকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। দলের পদ কেড়ে নেয়া হয়েছে। দলের মনোনয়নও দেয়া হয়নি সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে। সব হারিয়ে তিনি এখনও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়েই আছেন। এতে তার সুনাম নষ্ট হয়েছে। তবে এখন আবুল হোসেনকে মূল্যায়নের সুযোগ তৈরি হয়েছে। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য তিনি যোগ্য। সভানেত্রী শেখ হাসিনা যদি চান তবে তিনি আবার দলে গুরুত্বপূর্ণ পদে ফিরে আসতে পারেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি বৃহৎ দলে আন্তর্জাতিক সম্পাদকের গুরুত্ব অনেক বেশি। যোগ্য ব্যক্তিকেই এ পদে দায়িত্ব দেয়া হবে। দলের অবস্থা বিবেচনা করে বুঝা যাচ্ছে এ পদে সৈয়দ আবুল হোসেনকেই দেয়া হতে পারে। কারণ অতীতে তিনি যোগ্যতার সঙ্গেই এ দায়িত্ব পালন করেছেন। যে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল সেটাও এখন মিথ্য প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি বলেন, সামনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই এ পদে যিনি আসবেন তারও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে হবে। আবুল হোসেন যেহেতু আগে এ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তাই তাকে বেগ পেতে হবে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, দলের সভাপতিমণ্ডলীর তিনটি পদ এবং আন্তর্জাতিক সম্পাদকের পদটি ফাঁকা রয়েছে। সে হিসেবে সৈয়দ আবুল হোসেনর পদোন্নতিরও একটা সম্ভাবনা রয়েছে। আবুল হোসেনকে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যও করা হতে পারে।

এদিকে বর্তমানে আবুল হোসেন দেশের বাহিরে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবুল হোসেন। একবার প্রতিমন্ত্রী ও আরেকবার মন্ত্রী হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল তাকে। পরে আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এলে তাকে যোগাযোগ মন্ত্রী করা হয়। মাদারীপুর-৩ আসনে সাবেক এই মন্ত্রীকে বাদ দিয়ে দশম জাতীয় সংসদে মনোনয়ন দেয়া হয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে।