g বাঞ্ছারামপুরে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল শিশুখাদ্য ! | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

মঙ্গলবার, ১লা আগস্ট, ২০১৭ ইং ১৭ই শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

বাঞ্ছারামপুরে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল শিশুখাদ্য !

AmaderBrahmanbaria.COM
ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৭

---

ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে : জান্নাতে নূর প্রিয়ন্তি আর তার বান্ধবী ইলোরা অর্থী। দুজনেই ৪র্থ শ্রেণীতে পড়ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর সদর মডেল স্কুলে।স্কুলের বিরতির ফাঁকে ১০ বছর বয়সী এই দুই শিশু ক্যামিক্যাল (স্যাকারিন) ও হলুদ রঙ মেশানো আমড়াঁ খাচ্ছে।কথা বললে জানায়, বাবা-মা ২০ টাকা দিয়েছিল টিফিন খেতে।সে টাকা থেকে ১০ টাকার আমড়াঁ আর বাদবাকী ১০ টাকার আচাঁড় খেয়েছে।সেগুলো খাবার উপযোগী কি-না তা তারা জানে না।তারা জানায়,‘বিষাক্ত হলে বিষ দেখা যায় না কেন ? বিক্রেতারা বিক্রি করে কিভাবে? ভেজাল থাকলে তাদের পুলিশ ধরে না কেন? এই ‘কেন’-উত্তর কে দেবে,সেটাই অভিভাবক ও গণমানুষের প্রশ্ন।অসংখ্য অভিভাবকদের অভিযোগ, ‘প্রশাসনের গাফলতিতে বন্ধ হচ্ছে না ভেজাল ও বিষাক্ত শিশুখাদ্য।প্রশাসন চাইলে ১ মাসে ভেজালমুক্ত খাদ্য উপহার দিতে পারে জনগনকে’।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ১২২টি গ্রামের শতাধিক স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা , কিন্ডার গার্টেন,হাটবাজার অবাধে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল শিশুখাদ্য।যেনো, দেখার কেউ নেই।বলারও কেউ।ফেরীওয়ালারা ফেরী করে প্রকাশ্য দিবালোকে খোলা আকাশের নীচে ধূলাময়লা,রোগ-জীবানূ বহমান ও অবিক্রীত বাসী খাবার,ভেজাল ও বিষাক্ত নানান রকম খাবার নিত্যদিন বিক্রি করতে দেখা গেছে।
প্রতিনিয়ত এ খাবার খেয়ে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে।দীর্ঘদিন উপজেলার প্রত্যন্ত পাড়া-মহল্লার ছোট-বড় দোকানে/ফেরী করে ভেজাল ও বিষাক্ত ভাবার বেঁচাকেনা চললেও এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কোনো নঁজর নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে,স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে বিক্রি হচ্ছে অ-অনুমোদিত লজেন্স, চুইংগাম, কৃত্রিম লিচু,চকোলেট,আঁচাড়,ড্রিংকস,চিপস।শিশুদের আকৃষ্ট করতে ভেজাল এসব খাবারের সঙ্গে বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে বাশিঁ,লটারীর টিকেট,প্লাষ্টিকের স্পাইডারম্যান,ডোরেমন, সুপারম্যান,পুতুল,খেলনা-পাতিল ও বিভিন্ন ষ্টিকার।অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরী সস্তা দরের এ খাবার খেয়ে শিশুরা জন্ডিস,আমাশয়-ডায়রিয়া ও পেটের পীড়ায় আক্্রান্ত হচ্ছে।বাধাগ্রস্থ্য হচ্ছে শিশুদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশ।
বাঞ্ছারামপুর সরকারি হাসপাতালের প্রবীণ চিকিৎসক ডা.হাবিবুর রহমান,পুষ্টি ও শিশুখাদ্য বিষয়ে বিশেষঙ্গ চিকিৎসক ডা.হাসিনাউদ্দৌল্লা সাথে আলাপ করলে তারা জানান,-‘রাস্তার পাশে বিক্রি করা খোলা খাবার খেলে ক্ষুদামন্দা,জন্ডিস,এন্টিফিবার,পেটরে বিভিন্ন রকম পীড়া,পেটরে প্রদাহসহ নানা রোগ হতে পারে।এছাড়া কৃত্রিম আইসক্রীম ও শরবতের মাধ্যমে,ছড়াতে পারে পানিবাহিত যে কোনো রোগ।’
ইউনিসেফের (নারী ও শিশু সুরক্ষা)বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফোকালপার্সন সাংবাদিক আদিত্য ফয়সাল খান জানান,-‘ এসব বিষাক্ত খাবার থেকে শিশুদের রক্ষা করতে হলে নিজ নিজ জায়গা থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে।নিজ সন্তানদেরও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে”।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শওকত ওসমান এবিষয়ে বলেন,-‘আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগে-পড়ে ভোজালকারীদের তাৎক্ষণিক বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও জরিমানা করেছি।অভিযোগ পেলে,আমরা প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান আদালত চালিয়ে ভেজাল শিশুখাদ্য প্রস্তুতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার স্থানীয় সংসদ সদস্য ক্যা.এবিএম তাজুল ইসলাম এমপি এবিষয়ে জানান, -‘বিষয়টি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণসম্পন্ন।সমাজের সবাই সহ মা-বাবা,জনপ্রতিনিধি,অভিভাবক-শিক্ষক সবাইকে সচেতন হতে হবে।

এ জাতীয় আরও খবর