আজ বসছে সার্চ কমিটি
নিউজ ডেস্ক : নতুন নির্বাচন কমিশনারদের খুঁজে বের করতে গঠিত কমিটি প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসছে আজ শনিবার। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দীর্ঘ একমাস সংলাপের পর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বুধবার ছয় সদস্যের এই সার্চ কমিটি গঠন করেন।
ছয় সদস্যের এই কমিটি আহ্বায়ক হিসেবে আছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। সদস্য সচিব হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। সদস্য হিসেবে আছেন পিএসসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিট জেনারেল (সিএজি) মাহমুদ আহমেদ এবং চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য শিরীণ আখতার।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিটির ছয় সদস্যকে বৈঠকের স্থান এবং সময়সূচি জানিয়ে দিয়েছে। সার্চ কমিটির প্রথম সভা শনিবার বেলা ১১টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত হবে।
সার্চ কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘শনিবার আমরা প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসব। সেখানে সবার সিদ্ধান্তে একটি ফ্রেম ওয়ার্ক তৈরি করা হবে। এরপর সবাইকে বিষয়টি জানানো হবে। আশা করি এটি নিয়ে কোনো বিতর্ক হবে না।’
বৈঠকের দশ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জন্য দুজন ও অন্য চার পদের জন্য আটজনের নাম প্রস্তাব করবে সার্চ কমিটি। তাদের মধ্য থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ পাঁচ কমিশনার নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।
২০১২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের গঠিত সার্চ কমিটিও বৈঠকের ১০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে দুজনের নাম প্রস্তাব করেছিলেন, তাদের একজনকে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার করেন। গতবার চারটি পদে দুজন করে আটজনের নাম সুপারিশ করা হয়, যাদের মধ্য থেকে অন্য চার কমিশনার নিয়োগ পান।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনরে মেয়াদ শেষ হচ্ছে আসছে ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখ। এর মধ্যে নতুন কমিশন নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।
নতুন কমিশনের সদস্যদের খুঁজে বের করতে রাষ্ট্রপতির গঠিত সার্চ কমিটি নিয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগ সন্তোষ প্রকাশ করলেও রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা কমিটি প্রত্যাখ্যান না করলেও এর কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে আপত্তি তুলেছে।
শুক্রবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সার্চ কমিটিতে আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত নেতাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই কমিটিকে আমি প্রত্যাখ্যান করতে চাই না। তবে নির্বাচন কমিশন গঠনের পর প্রত্যাখ্যানের প্রসঙ্গ আসবে।’
সার্চ কমিটির ছয় সদস্যের সংক্ষিপ্ত পরিচয়
সৈয়দ মাহমুদ হোসেন: ছয় বছর ধরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। এর আগে ১৯৯৯ সাসের ডিসেম্বরে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পান।
ওবায়দুল হাসান: ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ২০০৫ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী দায়িত্ব পান তিনি। ২০০৯ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পান।
মোহাম্মদ সাদিক: ২০১৪ সালের শেষে তিনি পিএসসি সদস্য হিসেবে নিয়োগ পান। আমলাদের মধ্যে কবি হিসেবে বিশেষ পরিচিতি আছে তাঁর। সাদিক জাতীয় কবিতা পরিষদ ও বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি।
মাসুদ আহমেদ: তিনি পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ছিলেন। তিনি লেখক হিসেবে অনেক সুনাম অর্জন করেছিলের। ইতোমধ্যে তিনি ১০০টি গল্প এবং সাতটি উপন্যাস লিখেছেন।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম: তিনি অধ্যাপনার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস সমানভাবে লিখে যাচ্ছেন। এর মধ্যে তিনি পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পেয়েছেন। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য তিনি।
শিরীণ আখতার: শিরীণ আখতার প্রথম নারী উপ-উপাচার্য হিসেবে গত বছর মার্চ মাস থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অষ্টম উপ-উপাচার্য। ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।