কারামুক্ত রসরাজ
---
নিজস্ব প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় গ্রেফতার হওয়া রসরাজ দাসের (২৮) জামিন মঞ্জুর করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। গত সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন এর আদালতে তার জামিন মঞ্জুর করেন। রসরাজ দাসের পক্ষের আইনজীবীরা জানান, গত সোমবার জামিনের শুনানির দিন ধার্য্য ছিল। ধার্য্য দিনে আসামি রসরাজ দাসের উপস্থিতিতে জামিনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ফরেনসিক প্রতিবেদন অনুযায়ী রসরাজ দাসের মোবাইল থেকে ধর্ম অবমাননার ছবি আপলোডের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক রিপোর্ট আদালতে উপস্থাপনের পর আদালত পরবর্তী পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল না হওয়া পর্যন্ত তার অন্তর্বর্তীকালিন জামিন মঞ্জুর করেন। এদিকে মঙ্গলবার রসরাজের বাড়ি থেকে কারাগারের সামনে অপেক্ষা করছিল তার মামা ইন্দ্রজিৎ দাস, ভাই দয়াময় দাস ও ভগ্নিপতি নেপাল চন্দ্র দাস। তবে রসরাজের কারাগার থেকে মুক্তি একদিন পর হলেও জামিন হওয়াতে খুশি তারা। জেলা কারাগারের জেল সুপার মোঃ নূরুন্নবী ভূইয় আমাদের অর্থনীতিকে জানান, গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১ টার পরে তার জামিনের কাগজ আদালত থেকে আমাদের হাতে এসে পৌছায়। তার মামা ইন্দ্রজিৎ দাসের কাছে বেলা সোয়া ১২ টার দিকে রসরাজ দাসকে আমরা বুঝিয়ে দেই। উল্লেখ্য যে, গত বছরের ২৮ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে রসরাজ দাসের আইডি ব্যবহার করে পবিত্র কাবা শরীফের অবমাননা কর ছবি পোস্ট করা হয়। পরে এলাকাবাসী ওই ছবি ফেসবুকে দেখতে পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।
পরদিন ২৯ অক্টোবর ওই ঘটনায় নাসিরনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাওছার হোসেন বাদী হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ৩০ অক্টোবর রসরাজকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে ৮ই নভেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালতে রসরাজের জামিন শুনানি হয়। তবে ঐ সময় আদালত রসরাজের জামিন না মঞ্জুর করেন। এরপর ২ ডিসেম্বর জামিন আবেদনের পর জেলা ও দায়রা জজ আদালত শুনানি শেষে ৩ জানুয়রী পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য্য করেন। রসরাজ আদালতে সশরীরে হাজির না থাকায় ১৬ই জানুয়ারী পরবর্তী দিন ধার্য্য করেন আদালত। এ পর্যন্ত নাসিরনগরের ঘটনায় মন্দির ও বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ও পরবর্তীতে বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পৃথকভাবে ৮ টি মামলা হয় থানায়। আসামী গ্রেফতার করা হয় ১০৭ জন।