আত্মসমর্পণের ভান করে বিস্ফোরণ ঘটায় নারী জঙ্গি
নিউজ ডেস্ক : মোবাইল ফোনে তোলা ছবিতে চেহারার কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ইট বিছানো একটা খোলা জায়গায় পড়ে আছে দেহটি। শরীর কালো বোরকায় আবৃত। পা দুটি খালি।
পুলিশের দাবি যদি সত্যি হয়ে থাকে, বাংলাদেশের প্রথম মহিলা আত্মঘাতী বোমারুর ছবি এটি।
যে পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর মোবাইল ফোনে ছবিটি তোলেন, তিনি পরে সেটি শেয়ার করেছেন আশকোনায় জড়ো হওয়া বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সঙ্গে।
বাংলাদেশে সম্প্রতি মাথা চাড়া দিয়ে উঠা জঙ্গী ইসলামী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যে মহিলারাও যুক্ত হয়ে পড়ছেন, সেটি নতুন তথ্য নয়।
কিন্তু এই প্রথম কোন মহিলা জঙ্গি এভাবে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে প্রাণ হারালেন।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তারা যখন আশকোনার বাড়িতে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের আত্মসমপর্ণের আহ্বান জানাচ্ছিলেন, তখন এই মহিলা আত্মসমর্পণের ভান করে বেরিয়ে আসেন।
তার সঙ্গে ছিল এক মেয়ে শিশু।
বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন মহিলা। আহত হয় সাথের শিশুটি।
তবে পুলিশ আহত শিশুটিকে পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। আর বোমায় আহত জঙ্গি মহিলা মারা যায়।
নিহত আত্মঘাতী বিস্ফোরনকারী নারী ‘জঙ্গি সুমনের স্ত্রী’ বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে এই জঙ্গি সুমন সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
আত্মঘাতী হামলাকারী নারীর সাথে থাকা যে ৬/৭ বছর বয়সী মেয়েশিশুটি আহত হয়েছে সে অপর একজন জঙ্গির মেয়ে বলে পুলিশের কিছু সূত্র থেকে জানানো হচ্ছে।
অন্য জঙ্গিদের পরিচয়:
আশকোনার সেই বাড়িটিতে যখন পুলিশ অভিযান শুরু করে তখন সেখানে ছিলেন মোট সাত জন। শনিবার সকালেই তাদের মধ্যে চারজন আত্মসমর্পণ করে।
আত্মসমর্পণ করা চারজনের দুজন হচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নাহার এবং তার মেয়ে। মেজর জাহিদ গত সেপ্টেম্বরে মিরপুরের রুপনগরে পুলিশের এক অভিযানে নিহত হন এবং তাকে নব্য জেএমবির অন্যতম প্রশিক্ষক হিসেবে জানায় পুলিশ।
অন্য যে দুজন আত্মসমর্পণ করেছেন পুলিশের ভাষ্যমতে, তারা জঙ্গি মুসার স্ত্রী এবং কন্যা। জঙ্গি মুসাকে বর্তমানে নব্য জেএমবির অন্যতম নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বর্তমানে সে পলাতক রয়েছে।
সবার শেষে যে ‘ছেলেটি’ পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা এবং গুলি ছুড়তে থাকে তাকে তানভীর কাদেরীর ছেলে হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।
তানভীর কাদেরী ছিল নব্য জেএমবির অন্যতম নেতা এবং ঢাকার আজিমপুরে এক পুলিশী অভিযানের সময় সে আত্মহত্যা করে বলে জানায় পুলিশ। নব্য জেএমবির নেতা তামিম চৌধুরী নিহত হবার পর তানভীর কাদেরীই নব্য জেএমবির প্রধান হবে ধারণা করছিল পুলিশ।
ঐ অভিযানে তানভীর কাদেরীর স্ত্রী এবং এক ছেলেকে পুলিশ আটক করে।বিবিসি বাংলার খবর