সালমান আমার মেন্টর : হিমেশ রেশমিয়া
বিনোদন ডেস্ক : ‘অভিনেতা সালমান খান আমার মেন্টর (পরামর্শদাতা)। আমার মনে হয়, ওর ঠোঁটেই আমার গলা ভালো যায়। তা ছাড়া সালমান খানের পরামর্শ মেনেই আমি এখনো নিজেকে একজন নবাগত ভাবি।’ সংবাদমাধ্যমের কাছে এভাবেই নিজের কথার ঝাঁপি খুললেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী হিমেশ রেশমিয়া।
নিজের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হিমেশ বললেন, ‘সালমান খানই আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, ঝুলিতে যতই হিট গান থাকুক, প্রত্যেকবারই নতুন করে গান শুরু করতে হয়। আমিও মনে করি, এই মন্ত্রটা সবার মাথায় রাখা উচিত।’ নিজের কথা বলতে গিয়ে হিমেশ বারবার টেনে নিয়ে এলেন সালমানের কথা। বললেন, “সালমান কিন্তু মানুষের জন্য খুব ভাবে। আর এত বড় সুপারস্টার হওয়ার পরও হাড়ভাঙা খাটুনি করে সালমান। সুপারস্টার সালমানের তো সকলেই ভক্ত। কিন্তু আমরা যাঁরা সালমানকে কাছ থেকে দেখেছি তাঁরা জানি, সালমান আসলে কী রকম। আমি ব্যক্তিগতভাবে মানুষ সালমানের ভীষণ ভক্ত। জীবনে প্রথম ব্রেক পাওয়া ‘পেয়ার কিয়া তো ডারনা কেয়া’ ছবিতেও সালমান আমাকে সুযোগ দিয়েছিলেন।”
হিমেশ মনে করেন, এভারগ্রিন ক্ল্যাসিক গানের রিমেক খারাপ কিছু নয়। নতুন প্রজন্মের কাছে নতুনভাবে পুরোনো গান পৌঁছে দেওয়া দোষের কিছু নয় বলেই মনে করেন তিনি। জানালেন, গানের মেলোডি অক্ষুণ্ণ রেখে, আত্মাটাকে ঠিক রেখে যদি গান করা যায় তাহলে দোষের কী আছে? বললেন, একজন গায়কের কণ্ঠস্বর যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ ‘গ্রামার অব মিউজিক’। সব সময়ই সংগীতের ব্যাকরণ মেনে গান গাওয়া জরুরি। এ ছাড়া নতুন গান হিট হওয়ার জন্য ‘ভয়েস’-এর ভূমিকাও অপরিসীম। একটা ফ্রেশ ভয়েসের জুড়ি নেই।
কথায় কথায় হিমেশ বললেন, ‘জি টিভি আমাকে প্রথম রুটি-রুজি দিয়েছিল। মাত্র ১৬ বছর বয়সে জি টিভিতে প্রথম টেলিভিশন সিরিয়াল প্রযোজনা করেছিলাম। সুভাষজি ও পুনিতজির সঙ্গে কাজ করেই জীবনের প্রথম অর্থ উপার্জন করি। সংগীতের ভুবনে লক্ষ্মীকান্ত প্যারেলাল হিমেশের পছন্দের সংগীত পরিচালক। বর্তমান সময়ে রিয়ালিটি শোর রমরমা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বললেন, আগে একটা কথা শোনা যেত, রিয়ালিটি শো শিল্পী তৈরি করে না। আজ কিন্তু সেই ধারণা পাল্টেছে। এখন রিয়েলিটি শো থেকেই উঠে এসে অনেকে বিভিন্ন ফিল্মে গান গায়, জনপ্রিয়তাও পায়। তবে রিয়েলিটি শো খুব তাড়াতাড়ি খ্যাতি এনে দিলেও গানের রেওয়াজ ছেড়ে দিলে কিন্তু চলবে না। বললেন, এটা একটা ডেইলি এক্সারসাইজের মতো ব্যাপার। সেই সঙ্গে পড়াশোনাটা করাও জরুরি।
নতুন প্রতিভাকে হাত ধরে সব সময়ই এগিয়ে নিয়ে যেতে চান হিমেশ। বললেন, ‘আমার বাবা বিপিন রেশমিয়া ছিলেন আমার অন্যতম গুরু। বাবা আমাকে বলেছিলেন, সব সময়ই নতুনদের নিয়ে কাজ করা উচিত। বাবার সেই কথাটা আমি সব সময় মাথায় রাখি। বাবার থেকে পাওয়া বিদ্যা আমি নতুনদের শেখানোর চেষ্টা করি। আমি নতুনদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতে চাই। কারণ, আমার বাবাও বন্ধুর মতো মিশে আমাকে গান শিখিয়েছিলেন। আমি সেটাই নতুনদের ফিরিয়ে দিতে চাই। শিক্ষকের মতো আচরণ না করে বন্ধুর মতো মিশে গেলেই শেখাটা অনেক সহজ হয়ে যায়। আমি মনে করি, নতুন প্রতিভাদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই জ্যেষ্ঠদের দায়িত্ব।’
গানের সঙ্গে অভিনয় জগতেও পা রেখেছেন হিমেশ। বললেন, ‘এখন পর্যন্ত ১১৫টা ছবিতে সংগীত পরিচালনার কাজ করেছি। অভিনয় করেছি ১১টা ছবিতে। সালমানের কাছে আমি কৃতজ্ঞ আমাকে ছবিতে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। তবে অভিনেতা হিসেবে আমি এখনো নতুন। আগামী বছর আমার দুটো ছবি আসছে। অভিনয়ের ক্ষেত্রে আমি মোটেই তাড়াহুড়ো করতে চাই না।’ বললেন, ‘সংগীত পরিচালক হিসেবে সাফল্য পাওয়ার পর এখন দায়িত্ব অনেকটা বেড়ে গেছে। এতে এখন একটু বেছে বেছে ছবি করতে চাই।’
সংগীতের ক্ষেত্রে লোকসংগীত হিমেশের অনুপ্রেরণা। বললেন, ‘আমার যত ডান্স ট্র্যাক আছে, তার অনুপ্রেরণা পেয়েছি লোকসংগীত থেকে। বাংলার লোকসংগীত খুব সমৃদ্ধ। আমি নিশ্চয়ই একদিন বাংলা গান গাইব।’