একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া জামায়াতের নেতা মীর কাসেম আলীর পরিবারের মালিকানাধীন ট্যাংকার (ভোজ্যতেল পরিবহনকারী জাহাজ) ‘এমটি ফজলে রাব্বী’ আটকের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগের অ্যাডমিরালটি আদালত। ১০ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগের অ্যাডমিরালটি একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
১৮ জন কর্মকর্তা ও ক্রুর এক কোটি ৪৩ লাখ ১২ হাজার টাকা বকেয়া বেতন পরিশোধের জন্য ট্যাংকারটির ক্যাপ্টেন জুয়েল রহমান এ মামলা করেন। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী মামলাটি আমলে নিয়ে জাহাজটি আটকের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে জাহাজের মালিকপক্ষকে আগামী ২১ নভেম্বর হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
এই ট্যাংকার নিয়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় ‘ক্যাপ্টেন-ক্রুদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
ক্যাপ্টেন জুয়েল রহমানের কৌঁসুলি জিনিয়া আমিন প্রথম আলোকে বলেন, জাহাজ আটকের নির্দেশ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে। জাহাজটি এখন হাইকোর্টের অ্যাডমিরালটি আদালতের হেফাজতে আছে। আদালত একই সঙ্গে জাহাজের মালিকপক্ষকে আগামী ২১ নভেম্বর হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর বকেয়া বেতন-ভাতাদি নিয়ে মামলার মূল শুনানি শুরু হবে।
এমটি ফজলে রাব্বীর ক্যাপ্টেন ও চিফ ইঞ্জিনিয়ার তিন মাস এবং ক্রুদের ১৪ মাস ধরে বেতন-ভাতা দেওয়া হচ্ছে না। গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে জাহাজে খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে শিপিং এজেন্ট। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ক্যাপ্টেন জুয়েল রহমান নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তরের মুখ্য কর্মকর্তাকে চিঠি দেন। পানামার পতাকাবাহী (নিবন্ধন হয়েছে পানামায়) জাহাজটি মীর কাসেমের ছেলে মাহমুদ বিন কাসেম পরিচালনা করেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
চট্টগ্রাম ড্রাই ডকের ১ নম্বর জেটিতে রয়েছে জাহাজটি। এতে ক্যাপ্টেনসহ ১৮ জন সদস্য অবস্থান করছেন।
ক্যাপ্টেন মো. জুয়েল রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছি না। তাই বকেয়া বেতন পাওয়ার জন্য হাইকোর্টের অ্যাডমিরালটি আদালতে মামলা করেছি। এখন আদালত সবকিছু নির্ধারণ করবেন।’