লাইফস্টাইল ডেস্ক :আপনার টিনএজ বয়সের কথা মনে আছে? একটুতেই রাগ আর অভিমান করে বসতেন সেই বয়সটাতে। অনেক কিছুই বুঝেও জিদ ধরে না বোঝার ভান করতেন কিংবা রাগ দেখতেন। আবার মনের ভেতরে সব কিছু নিয়েই কৌতুহল কাজ করতো। আর সেই কৌতুহলের বশেই হয়তো অনেক ভুল পথেও পা বাড়িয়েছেন একাধিকবার। তাই না?
আসলে টিনএজ বয়সটাই এমন! ভুল করে করে শেখার বয়স। টিনএজ বয়সটা খুবই স্পর্শকাতর একটি সময়। টিনএজারদেরকে অনেক কিছুই বলা উচিত না, অনেক কিছু বুঝে শুনে তবেই বলা উচিত। দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে এগুলো না বুঝে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা বলে ফেলি।
ফলে তারা অভিমান করে, জেদ ধরে অথবা বড় কোনো ভুল করে ফেলে। অথবা আপনার সম্পর্কে তার হয়ে যায় একটি বিরূপ ধারণা। তাই টিনএজারদের সাথে কথা বলার সময় কিছুটা কৌশল ও সাবধানতা অবলম্বন করাই ভালো। আসুন জেনে নেয়া যাক টিনএজদেরকে কখনই বলতে হয় না এমন ৭টি কথা সম্পর্কে।
খোঁটা দেয়া বা তিরস্কার করা
টিনএজারদেরকে কোনো ভাবেই খোঁটা দেয়া কিংবা কোনো বিষয় নিয়ে তিরষ্কার করা উচিত না। এতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। অনেক সময় আমরা ভাবি যে কিছুটা তিরস্কার করলে হয়তো পরবর্তীতে তারা ব্যাপারটি শুধরে নেবে। কিন্তু এই বিষয়টি টিনএজারদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
তাই টিনএজারদেরকে তিরস্কার করে কিংবা খোঁটা দিয়ে কথা না বলে ধৈর্য্য নিয়ে আদর করে বোঝানো উচিত।
চেহারা কিংবা দেহ নিয়ে খারাপ মন্তব্য
অনেক সময় অনেকেই দুষ্টামির ছলে বলে থাকেন ‘তোমার গায়ের রঙ তো কালো’ কিংবা ‘তুমি অনেক মোটা”! এমনকি নিজের মা-বাবা-ভাই-বোনেরাও এসব বলে থাকেন। অথচ এই ধরণের কথা গুলো একজন টিনএজারকে কখনোই বলা উচিত নয়। কারণ এই ধরণের কথা গুলো তাদের মনে দাগ কেটে যায় এবং পরবর্তীতে সারা জীবন তারা অসম্ভব হীনমন্যতায় ভোগে। অনেকেই চিরস্থায়ী বিষণ্ণতার রোগী হয়ে যায়।
প্রেম নিয়ে গাল মন্দ করা
টিনএজ বয়সে বেশিরভাগ ছেলে-মেয়েরাই প্রেমে পড়ে। প্রেমে পড়ার কারণে অনেক সময় অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। টিনএজ বয়সে কেউ প্রেমে পড়লে তাকে সেটা নিয়ে গাল মন্দ করা উচিত না। এমনকি মোবাইল রেখে দেয়া কিংবা ঘরে বন্দি করে রাখাও উচিত না।
এক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হয়ে অনেকে বাড়ি ছেড়ে পালানোর মত ভুলও করে বসে। বরং যেভাবে বোঝালে সে বুঝবে ও ভুল পথে পা বাড়াবে না, সেটাই অবলম্বন করা উচিত।
মা/বাবার নামে বদনাম
টিনএজারা মা/বাবার নামে বদনাম কিংবা মা/বাবার দাম্পত্য জটিলতা সহ্য করতে পারে না। এই ধরণের পরিস্থিতিতে তারা নিজেদেরকে অসহায় মনে করে এবং হতাশাগ্রস্থ হয়ে যায়। ফলে হতাশাগ্রস্থ হয়ে অনেক সময়ই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে কিংবা একাকীত্বে ভোগে।
তাই যাদের ঘরে টিনএজ সন্তান আছে তারা সন্তানের কাছে বাবা/মায়ের বদনাম কিংবা দোষ বলবেন না। অন্তত সন্তানের সামনে নিজেদের সম্পর্কের জটিলতা প্রকাশ না করাই ভালো।
নেতিবাচক কথা বলা
অনেকে মা-বাবাই রাগের মাথায় টিনএজারদের অনেক নেতিবাচক করা বলে ফেলে। “তুমি আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছ”, “তুমি এটা পারবেনা”, কিংবা “তুমি মরো না কেন” ইত্যাদি কথা গুলো টিনএজারা সহ্য করতে পারে না এবং খুব সিরিয়াসলি নিয়ে থাকে। ফলে তারা মনে খুব আঘাত পায়।
ফলে অনেক সময় তারা এই ধরণের কথা শুনে আত্মঘাতি হয়ে ওঠে এবং আত্মহত্যার মত ভুল করে ফেলে।
তুলনা করা
“অমুকের পরীক্ষার রেজাল্ট তোমার চাইতে ভালো” কিংবা “তমুক তোমার চাইতে অনেক বেশি লক্ষ্মী- এসব কথা টিনএজারদের সামনে না বলাই ভালো। কারণ এই ধরণের কথা তারা সহ্য করতে পারে না এবং এসব কথা গুলো তাদেরকে আরো বেশি জেদী করে দেয়। ফলে তারা অনেক বেশি মেজাজি ও অবাধ্য হয়ে ওঠে।
টিনএজারদের সামনে অশ্লীল কথা
টিনএজারদের সামনে অশ্লীল কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। টিনএজারদের সামনে অশালীন কথাবার্তা বললে তারা বিব্রতবোধ করে এবং সেগুলো শিখে অন্যদেরকে বলে। এছাড়াও এই ধরণের কথা যে বলে তার উপর থেকে শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলে। তাই টিনএজাদের সামনে অশ্লীল কথাবার্তা বলা একেবারেই উচিত নয়।