নিউজ ডেস্ক : কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের পর এবার মাঠ পর্যায়ে আবার দল গোছানোর কাজ শুরু করতে যাচ্ছে বিএনপি। ঈদের পর পুরোদমে উপজেলা-জেলা কমিটি পুনর্গঠনের কাজ শুরু করতে চায় দলটি। এ নিয়ে গত আড়াই বছরে তৃতীয় দফা এই কাজে হাত দিতে যাচ্ছে বিএনপি।
এর আগে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব জেলা কমিটি পুনর্গঠনের নির্দেশ দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। পুনর্গঠনের সঙ্গে যুক্ত নেতারা বলছেন, এবার নির্দিষ্ট কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে না। সময়-সুযোগমতো সব জেলা কমিটি দ্রুত পুনর্গঠন করতে চান তাঁরা।
গত ১৯ মার্চ দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলন করে বিএনপি। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের সাড়ে পাঁচ মাস পর গত মাসে কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটিও একই দিন ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার কয়েক দিনের মাথায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহানকে মাঠ পর্যায়ে কমিটি পুনর্গঠনের দায়িত্ব দেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
গত ২৯ আগস্ট ঢাকা জেলা বিএনপির নতুন কমিটি (আংশিক) ঘোষণা করা হয়। সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন বাবুকে সভাপতি এবং খন্দকার আবু আশফাককে সাধারণ সম্পাদক করে ৫৬ সদস্যের ওই কমিটি করা হয়েছে। এ ছাড়া এ জেড এম রেজওয়ানুল হককে আহ্বায়ক করে দিনাজপুর জেলা কমিটিও একই দিন ঘোষণা করা হয়। তবে এই দুই জেলায় সম্মেলন হয়নি।
ঈদের পর মাঠ পর্যায়ে দল গোছানোর দিকে পুরোপুরি মনোযোগ দিতে চায় বিএনপি। জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, নতুন করে তৃণমূল পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদক, সহসাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। ঈদের পর উপজেলা-জেলা পর্যায়ের কমিটি পুনর্গঠনের মূল কাজ শুরু হবে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ার পর ওই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, দল গুছিয়ে তাঁরা আবার আন্দোলন শুরু করবেন। তাঁর ওই বক্তব্যের দুই মাস পর এপ্রিলে পঞ্চগড়, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, নওগাঁ, সৈয়দপুর, চট্টগ্রাম উত্তর, ময়মনসিংহ উত্তরসহ বেশ কয়েকটি জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। প্রথম দফায় বিএনপির মোট ৭৫টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ১০-১২টির কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়।
দল গোছানোর কাজ শেষ না করেই গত বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে আবার আন্দোলন শুরু করে বিএনপি। এতে জেলা কমিটি পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া থমকে যায়। আন্দোলন ও আন্দোলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের নামে মামলা-গ্রেপ্তার মিলিয়ে পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে বিএনপি।
বিএনপি সূত্র জানায়, ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় গত বছরের আগস্টে আবারও জেলা কমিটি পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয় দলটি। ৬ আগস্ট চিঠি দিয়ে জেলা পর্যায়ের সব কমিটি পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব কমিটি পুনর্গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। পৌরসভা নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও দলের জাতীয় সম্মেলনের ডামাডোলে বিএনপির জেলা কমিটি গোছানোর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় সম্মেলনের আগেই সম্মেলনের মাধ্যমে সব জেলার কমিটি করার কথা। প্রথম আলো।
তবে গত মার্চে অনুষ্ঠিত দলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের আগে দ্বিতীয় দফার উদ্যোগে রাঙামাটি, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সৈয়দপুর, সিলেট, ঝিনাইদহসহ ১৪টি জেলার কমিটি পুনর্গঠন করতে পেরেছিল বিএনপি।