নিউজ ডেস্ক : সাতক্ষীরার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) রিফাত আমিনের ছেলে রাশেদ সরোয়ার রুমনের বিরুদ্ধে এবার এক যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সাতক্ষীরা পৌরসভা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জুলফিকার রহমান উজ্জ্বলকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উজ্জ্বলকে বাঁচাতে গিয়ে হামলার শিকার হন আরো তিন যুবক। এঁদের মধ্যে মিলন নামের একজনকে কোপানো হয়েছে। তিনি একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। বাকি দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লা রাতে বলেন, ‘আমি বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। খবর পেয়ে আমি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলামকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। তিনি গিয়ে আহতদের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন। এখন আহতরা যদি মামলা দিতে চান আমরা মামলা নেব এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’
এর আগে গত রমজান মাসে সাহেব আলী নামের এক গরু ব্যবসায়ীকে রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ রয়েছে রুমনের বিরুদ্ধে। তার আগে জাতীয় সংসদের স্টিকারযুক্ত গাড়িসহ কয়েকজন তরুণীকে নিয়ে শ্যামনগরের একটি রিসোর্টে ধরা পড়ে জেল খাটেন রুমন।
যুবলীগ নেতা উজ্জ্বলের ওপর হামলার ব্যাপারে কথা বলার জন্য রাশেদ সরোয়ার রুমনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনার সঙ্গে ছেলের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন সংসদ সদস্য রিফাত আমিন।
সংসদ সদস্য রাতে বলেন, ‘শুনেছি পৌরসভায় টেন্ডার নিয়ে মারামারি হয়েছে। আমার ছেলে রুমন তখন সেখানে ছিল না। রুমন তো আমার গাড়ি ঠিক করতে মিস্ত্রির কাছে গেছে। সেই কাজেই নিয়োজিত ছিল সে।’
রিফাত আমিন আরো বলেন, ‘শহরে একটি চক্র আছে কোনো কিছু ঘটলেই তার সঙ্গে আমার ছেলে রুমনের নাম জড়িয়ে দেয়।’
আজকের ঘটনার ব্যাপারে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জুলফিকার রহমান উজ্জ্বল জানান, সন্ধ্যায় তিনি পৌরসভার একটি কক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা শাহাদাত হোসেন, প্যানেল মেয়র মো. সেলিম, কাউন্সিলর ফিরোজ হাসানসহ কয়েকজন বসেছিলেন। একপর্যায়ে নিচে নেমে আসতেই তাঁর ওপর হামলা চালান রাশেদ সরোয়ার রুমন ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। এ সময় রুমনের সঙ্গে জাতীয় সংসদের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছিল। রুমন রড দিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারপিট করতে থাকেন।
রুমনের সঙ্গে পুরাতন সাতক্ষীরার আসাদ, রুবেলসহ আরো চার-পাঁচজন ছিল উল্লেখ করে উজ্জ্বল আরো বলেন, ‘আমাকে বাঁচাতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন মিলন, কালাম, ফারুক ও সালাম।’
উজ্জ্বল আরো অভিযোগ করে বলেন, ‘পৌর প্রাঙ্গণে মারপিটের পর আমাকে পৌর গেটে এনে ফের মাথায় ও কোমরে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে রুমন। আমি মাটিতে পড়ে থাকলে আমার ওপর দিয়ে গাড়ি চালানোরও চেষ্টা করে সে।’
শহরের নারকেলতলায় রুপালি টাওয়ারের একটি দোকানে চাঁদাবাজিতে বাধা দেওয়ার জের ধরে ক্ষিপ্ত রুমন এই হামলা চালান বলে ধারণা করেন উজ্জ্বল।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত উজ্জ্বলের সহযোগীরা জানান, তাঁরা সেখানে একটি টেন্ডারের বিষয়ে কথাবার্তা বলছিলেন। বাইরে আসতেই রুমন তাদের লক্ষ্য করে গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে উজ্জ্বলের ওপর হামলা চালানো হয়। বাধা দিতে গেলে সবাইকে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। এনটিভি অনলাইন