নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারত নিয়ন্ত্রিত ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেয়ায় আকস্মিকভাবে পদ্মা নদীর পানি বেড়েছে। পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে ভারত সীমান্ত ঘেষাঁ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী চিলমারি ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের নীচু এলাকার ২০/২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে ওই দুটি ইউনিয়নের হাজারো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রতি তিন ঘন্টায় দুই সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। যে গতিতে পানি বাড়ছে, তা অব্যাহত থাকলে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতের বিহার রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সামলাতে ভারত নিয়ন্ত্রিত ফারাক্কা বাঁধের ১১৭টি গেটের মধ্যে ৯৯টি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। এতে উজান থেকে নেমে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমায় প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া প্রতি তিন ঘন্টায় ২ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীতে পানির বিপদসীমা হচ্ছে ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। শুক্রবার (২৬ আগষ্ট) দুপুর ১২ টায় পানি প্রবাহিত হয়েছে ১৪ দশমিক ০৬ সেন্টিমিটার। বিপদসীমা থেকে মাত্র পয়েন্ট ১৯ সেন্টিমিটার দূরে। গত ১৮ আগস্ট এ পানির মাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার। ১৯ আগস্ট ছিল ১৩ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। ২৫ আগস্ট ছিল ১৩ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার। প্রতি তিন ঘন্টায় ২ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রধান শাখা গড়াই নদীতেও পানি বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নৈমূল হক জানান, ভারতের বিহার রাজ্যে প্রবল বৃষ্টিপাতসহ সেখানকার বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভারত থেকে ফারাক্কা বাধের গেট খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে পদ্মায় হঠাৎ দ্রুতগতিতে পানি বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে হঠাৎ করে পদ্মায় পানি বাড়ায় জেলার দৌলতপুর উপজেলা চিলমারি ও রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের নীচু এলাকার ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় হাজারো মানুষ পানিবন্দী হয়ে চর দুর্ভোগে পড়েছে। কৃষকদের ঘরে মজুদকৃত পাট, ধান মরিচসহ খাদ্য-শষ্য পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এসব এলাকায় তীব্র খাবার পানি সংকটও দেখা দিয়েছে।
দৌলতদিয়া উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ জানান, গত কয়েক দিন ধরে অব্যাহতভাবে পদ্মা নদীর পানি বাড়ায় চিলমারির ১৮ গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষ।